শিরোনাম
গণ-অভ্যুত্থানে উত্তরায় আহত ১৪৬৭ এবং শহীদ ৮২ জন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার, দুর্নীতি ও পাচারকৃত টাকা উদ্ধার এবং রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি বামজোটের আমরা ফেসবুক গরম রাখতে ভালবাসি কালচারাল পলিটিক্স উছিলা সিনেমা মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংগীত ও সংবিধানের মূল ভিত্তির উপর আঘাতকারীদের ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান সিপিবির প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ'র স্মরণ সভা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান’এ উত্তরার শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকদের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত উত্তরায় সন্তানের নিরাপত্তাহীনতায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকবৃন্দের শোক সমাবেশ কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের পাশাপাশি রাষ্ট্রের সংস্কারের দাবি ছাত্র ইউনিয়নের ‘‘স্থায়িত্বশীল নগরায়ন: সমস্যা ও সমাধান’’ বিষয়ক বাপা’র পুস্তিকা উম্মোচন

কালচারাল পলিটিক্স উছিলা সিনেমা

আরিফুর রহমান


কালচারাল পলিটিক্স উছিলা সিনেমা

“কালচারাল পলিটিক্স উছিলা সিনেমা”

বেশ ক্রিস্পি শিরোনাম। আমি পটে যাই এবং জাদুঘরে যেয়ে দেখি শুধু আমি না হাজারখানেক শ্রোতা। যাক আরাম করে বসি শোনার জন্য। আমার চাহিদা থিওরি এর বাইরের কিছু আলাপ যা বর্তমান সময়ের সাথে সিনেমা পার্সপেকটিভ এ কালচার এবং পলিটিক্স কে একটা সুতায় গেঁথে আমাদের মতো আগ্রহী শ্রোতাদের কানে এবং মনে একটু আরাম দেবে। এবং অবশ্যই বক্তা হিসেবে যারা ছিলেন তাদের প্রত্যেককেই আমি চিনি, যদিও তারা কেউ আমাকে চেনেন না, কিন্তু আমি তাদের মুখ নিসৃত বাণী গোনায় ধরি! সেটাও ওখানে যাবার একটা বড় কারণ।

এই বার আমার তাদের প্রতি আকাঙ্ক্ষা একটু বেশি ছিল দুটো কারণে:

১। আমি নৃবিজ্ঞান পড়ে এসেছি

২। আমি ক্রিটিক্যাল ফিল্মমেকিং এর রাস্তায় আছি হাটি হাটি পা পা অনেকদিন।

তাই নৃবিজ্ঞানে কালচার, পলিটিক্স, রিপ্রেসেন্টেশন, হেজিমনি, প্রোপাগান্ডা মেশিন ইত্যাদি যা আমি পড়ে এসেছি দেশি বিদেশি পুস্তকে বা আমার শিক্ষক হাসান আশরাফ, মানস চৌধুরী, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, সাঈদ ফেরদৌস, মাহমুদুল সুমনসহ আরও অনেকের কাছে। তার বাইরের কিছু আলোচনা এখান থেকে যদি আমি মাথায় নিতে পারি এই আশায়।এর বাইরে সত্যি কথা বলতে সিনেমার ভবিষৎ কি হবে, আয় হায় এখন কে কি পাবে কে কি পাইসে অতীতে ইত্যাদি ম্যাঁও ম্যাঁও আমার ছিল না। আমি ব্যাকবেঞ্চার কিন্তু পুরো আলোচনা সামনে বসে শুনলাম। কিন্তু বক্তাদের ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ অধিকাংশ টা জুড়ে জায়গা করে নিল। আর কিছু থিউরি তো অতি অবশ্যই ছিল। কালচারাল পলিটিক্স বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে একটা কৌতহল উদ্দীপক আলোচনা হয়ে উঠলো না। কিন্তু শোনা গেল শেষ পর্যন্ত সুন্দর।

শুরু হল প্রশ্নোত্তর পর্ব। জুলাই গণপরিসর এর আয়োজকদের সাধুবাদ এত চমৎকার ভাবে কাগজে কলমে প্রশ্ন সংগ্রহ করার জন্য। বেশ কিছু চিন্তা উদ্রেক করা প্রশ্ন আলোচিত হলো যেমন বি এফ ডি সি থেকে কেউ এই আলোচনায় নেই কেন? কিভাবে একটি পুরুষ তান্ত্রিক ইন্ডাস্ট্রি কে নারী-পুরুষ সমতায় আনা যায়, অনুদান প্রদান প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন, নারী কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা-এই প্রসঙ্গে একজন মঞ্চে এসে মাইকে বললেন সংস্কার প্রক্রিয়ায় যারা নিযুক্ত হচ্ছেন তাদের লিটমাস টেস্ট আমরা কেন করছি না, এই নতুন নির্বাচকদের মধ্যেই যদি সর্ষের ভেতরের পুরনো ভূত বসে থাকে ইত্যাদি। এই পর্যায়ে (যদিও এটা শুধু প্রশ্নোত্তর পর্ব ছিল) সেতু আরিফ এবং ইমেল হক আয়োজকদের কাঠ গড়ায় দাঁড় করালেন।সেতু কাগজে প্রশ্ন না লিখে লিখেছিলেন তিনি স্টেজে মাইক এ প্রশ্নটা করতে চান। তিনি স্টেজে উঠলেন এবং এই আলোচনায় আশফাক নিপুন এর নাম থাকা শর্তেও তিনি নেই কেন কর্তৃপক্ষ জবাব দিতে হবে বললেন। একই ভাবে এখানে অমিতাভ রেজা চৌধুরী এর থাকার কথা তিনি নেই কেন? সেতু তার তীব্র বক্তব্যে নিকেতন সিন্ডিকেশন, সিনিয়র-জুনিয়র ক্ষমতা কাঠামো এবং মঞ্চে উপবিষ্ট বক্তাদের মধ্যে বিশেষ করে নুরুল আলম আতিক এবং সমসাময়িক নির্মাতাদের উদ্দেশ্য করে নানা অভিযোগ-অনুযোগ-অভিমান প্রদর্শন করেন এবং আতিক ভাইকে আঙ্গুল তুলে তাকে অনুদান পাপী বলেন তার অনুদান পাবার প্রক্রিয়া কে প্রশ্ন বিদ্ধ করে। এর পরবর্তিতে এমিল মঞ্চে ওঠেন (তিনি নিজের মত মঞ্চে উঠে যান) এবং এই আলোচনার উদ্দেশ্য বিধেয় নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। এই সব কিছু যে ভাষায় এবং যে শরীরি ভাষায় হলো তা অত্যন্ত দুঃখজনক।এক পর্যায়ে মোহাম্মদ আজম মঞ্চে উঠলেন আয়োজকদের পক্ষ থেকে এবং বললেন আমরা আজকে এখানে কোন সিনেমার রূপরেখা তৈরি বা বাস্তবায়নে করতে আসিনি। এটা জুলাই গণপরিসর এর তৃতীয় আয়োজন, এখানে বক্তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন শ্রোতারা তাদের প্রশ্ন করেছেন মঞ্চে এসেও কথা বলেছেন এখন আমরা এই আলোচনা সুন্দর ভাবে শেষ করতে চাই। কিন্তু এমিল দাবী করে বসেন আপনারা তাহলে মেনে নিন যে শিরোনামে আজকের আলোচনাটা হল সেটা ভুল ছিল। সঞ্চালক হুমায়রা বিলকিস মঞ্চে এসে বললেন এই যে আমরা স্বাধীন ভাবে সবাই কথা বলছি এটাই এই আলোচনার টেইক এওয়ে। কিন্তু চরম হাউ কাউ চলতেই থাকলো আমি তখন মাথা ব্যথা টেইক এওয়ে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম!

পাদটীকা: একটা ব্যাপার আমি স্পষ্ট বলতে চাই আমি আমার পূর্বের পোস্টে পাশাপাশি দুটো পোস্টার দিয়েছি। একটা জুলাই গণপরিসরের আয়োজন “কালচারাল পলিটিক্স উছিলা সিনেমা” এর পোস্টার অন্যটা এই আয়োজনকে যারা খারিজ করেছেন পোস্টারের উপর লাল কালিতে ক্রস চিহ্ন দিয়ে সেটা। আমি একজন ক্রিটিক্যাল ফিল্ম মেকার হিসেবে দুটো দিক খতিয়ে দেখতে সবাইকে আহবান করেছি এখন আপনারা এটাকে ক্রিটিক্যালি দেখে কি বুঝবেন সেটা আপনাদের ব্যাপার ছিল কিন্তু আমার পোস্ট এই দুই পক্ষ কেই ইন্টারেস্টিং ভাবে একটা গোলক ধাঁধায় ফেলেছে বলে আমি খবর পেয়েছি। আমি দুটি পক্ষের কোন টিতেই নেই, ছিলাম না। আমি শুধু নিজেকে একটু আলোকিত করতে গেসিলাম আর কি।

লেখক: আরিফুর রহমান

চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক