চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া, নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও বে টার্মিনাল পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে তা বাতিল করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ বিদেশিদের হাতে দেওয়া দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মন্তব্য করেছে ছাত্র ইউনিয়ন।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এক যৌথ বিবৃতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, "সম্পূর্ণ এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে লাভজনক টার্মিনাল নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের অপর ২ টি টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ ৩০ বছরের জন্য বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দিতে চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া অর্থ হল দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ফেলা। বন্দর শ্রমিকসহ দেশের ছাত্র-জনতা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছে। দেশের জনগণের বিরোধিতা সত্ত্বেও অন্তর্বর্তীকালীন চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোম্পানির হাতে ছেড়ে দিতে চায়। গত ২৭-২৮ জুন সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণের ডাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই রোডমার্চকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস, এবং যেকোন মূল্যে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন। যেকোন মূল্যে বিদেশি কোম্পানির হাতে বন্দরের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে চাওয়া এবং বন্দর রক্ষার রোডমার্চ প্রতিহত করার ঘোষণা দানের মধ্য দিয়েই ড. মুহাম্মদ ইউনুস তার চরিত্র প্রকাশ করেছেন। দেশের জনগণের মনে এই প্রশ্নও উদিত হয়েছে যে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশেষ কোন বিদেশি শক্তির তাবেদারি করছে। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কোনভাবেই বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া চলবে না। দেশিয় সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশিয় কোম্পানির দ্বারাই বন্দর পরিচালনা করতে হবে। অবিলম্বে সরকারকে এই চুক্তির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে করতে যাওয়া এই চুক্তি থেকে যদি সরে না আসে তবে বাংলাদেশের জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনে নেমে আসতে বাধ্য হবে। প্রয়োজনে ঢাকা-চট্টগ্রাম লংমার্চ করে সরকারকে আমাদের দাবি মেনে নিতে আমরা বাধ্য করবো, তবুও চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দিতে দেওয়া হবে না। আমরা দেশের সর্বস্তরের জনগণকে গণবিরোধী এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে রাজপথে নেমে আসতে আহ্বান জানাই।"
