শ্রীলঙ্কায় এমপিদের পালানো ঠেকাতে বিমানবন্দরের প্রবেশপথে বিক্ষোভকারীরা

শ্রীলঙ্কায় এমপিদের পালানো ঠেকাতে বিমানবন্দরের প্রবেশপথে বিক্ষোভকারীরা

তুমুল গণবিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর শ্রীলঙ্কার সংসদ সদস্যদের দেশত্যাগ ঠেকাতে বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বরাতে শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একদল বিক্ষুব্ধ তরুণ কাতুনায়েকে মুক্তবাণিজ্য জোন (এফটিজেড) এলাকার সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা রাস্তায় আড়াআড়ি করে যানবাহন রেখে অবরোধ করেছেন। ওই সড়ক দিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রধান বিমানবন্দর বন্দরনায়েক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে প্রবেশ করতে হয়।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, চলমান বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর যাতে সংসদ সদস্যরা দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সে জন্য তাঁরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে সড়ক আটকেছেন।

গতকাল সোমবার তুমুল বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তাতেও জনরোষ কমেনি। গতকাল রাতে হাজারো বিক্ষোভকারী কলম্বোয় রাজাপক্ষের বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা রাজধানীর ‘টেম্পল ট্রিজ’ বাসভবনের মূল দোতলা ভবনে হামলার চেষ্টা করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আটকা পড়েন।

পরে আজ মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগেই সেনা পাহারায় কলম্বোর সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি শহরে একটি নৌঘাঁটিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। ওই নৌঘাঁটিও ঘিরে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের লাগাম টানতে গত শুক্রবার থেকে শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। চলছে কারফিউ। এখন পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

করোনার ধাক্কার পাশাপাশি সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটি। ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, চলছে বিদ্যুৎ–বিভ্রাট। এ পরিস্থিতিতে সরকার পতনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। সেই সঙ্গে চলছে চরম রাজনৈতিক অচলাবস্থা।