ভারতে ২০১৯ সালে দূষণজনিত নানা কারণে ২৩ লাখের বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হয়েছে বলে লানসেটের নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে।
যাদের মধ্যে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ মারা গেছেন বায়ু দূষণ জনিত রোগে ভুগে। আর পাঁচ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ পানি দূষণ।
লানসেট কমিশন অন পলিউশন অ্যান্ড হেল্থ-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিশ্বজুড়ে প্রতি ছয় জনে এক জনের মৃত্যুর কারণ দূষণ। সংখ্যার হিসেবে যা প্রায় ৯০ লাখ।
এক ভারতেই বায়ু দূষণের কারণে প্রতিবছর গড়ে ১০ লাখ মানুষ মারা যান।
আর বিশ্বজুড়ে বায়ু দূষণে ২০১৯ সালে মারা গেছে প্রায় ৬৭ লাখ মানুষ। এছাড়া, দূষিত পানি ১৪ লাখ এবং সীসা দূষণ নয় লাখ মানুষের অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী।
গবেষণায় আরো বলা হয়, বায়ু দূষণ জনিত কারণে বিশ্বজুড়ে যত মানুষের মৃত্যু হয় তার ৯০ শতাংশের বেশির বাস নিম্ন বা মধ্যম আয়ের দেশে।
তালিকায় ভারত সবার উপরে (২৩ লাখ ৬০ হাজার)। তারপরই চীনের অবস্থান (২১ লাখ)।
বায়ু দূষণ কমাতে ভারত কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে অন্যতম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচ্চাভিলাষী ‘প্রধানমন্ত্রী উজ্বালা যোজনা’। ২০১৬ সালে শুরু করা এই স্কিমে গ্রামের দরিদ্র নারীদের লাকড়ির চুলার পরিবর্তে গ্যাসের চুলায় রান্নায় সাহায্য দেওয়া হয়। যদিও এখনো অনেক নারী এই স্কিমের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘ভারত দূষণের উৎস প্রশমিত করার জন্য যন্ত্র এবং নিয়ন্ত্রক ক্ষমতা তৈরি করেছে। কিন্তু দূষণ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা এবং যথেষ্ট উন্নতি অর্জনের জন্য সমন্বিত কোন ব্যবস্থা সেখানে এখনো নেই।”
ভারতের ৯৩ শতাংশ এলাকায় দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহনীয় মাত্রার দূষণ নির্দেশিকার অনেক উপরে।
ভারতের নগরীগুলো তাই নিয়মিত বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরীর তালিকায় উপরের দিকে থাকে। তার মধ্যে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ৪৮ কোটির বেশি মানুষ ‘বিশ্বের সব থেকে ভয়াবহ বায়ু দূষণের মধ্যে বসবাস করে’ বলেও গবেষণায় বলা হয়।
গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর এনার্জি পলিসি ইন্সটিটিউটের ডেটা অনুযায়ী, যদি ভারতের রাজধানী দিল্লির বায়ু দূষণের মাত্রা ডব্লিউএইচও-র দেয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী নামিয়ে আনা যেত তবে সেখানকার বাসিন্দাদের আয়ু ১০ বছর বেড়ে যেত।