দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম রোববার দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। ঢাকার ৭ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে দুপুর ২টায় তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন।
ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য ব্যবসায়ী হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় হাই কোর্টের রায়ে ১০ বছরের সাজা পরোয়ানা রয়েছে। দণ্ড মাথায় নিয়েই রোজার ঈদের আগের দিন ২ মে চিকিৎসার কথা জানিয়ে ব্যাংককে গেলে তার পালানোর গুঞ্জন ছড়ায়।
সেসময় দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, সাজাপ্রাপ্ত হাজী সেলিমের বিদেশ যাওয়ার ‘আইনি কোনো সুযোগ নেই’।
অন্যদিকে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি না পাওয়া এবং দণ্ডিত হাজী সেলিমের যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপি নেতারা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, হাজী সেলিমের বিদেশ যাওয়া ও ফিরে আসায় আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে ঈদের পর ৫ মে দেশে ফেরেন হাজী সেলিম। এরপর তার আত্মসমর্পণ নিয়ে নানা খবর ছড়ায়।
দুদকের করা অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের যে মামলায় হাজী সেলিমের সাজা হয়েছে, সেটি দায়ের করা হয়েছিল ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর, সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জরুরি অবস্থার মধ্যে।
পরের বছর ২৭ এপ্রিল বিশেষ আদালত তাকে দুই ধারায় মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। পাশাপাশি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার অভিযোগে হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগমকে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হাজী সেলিম এবং তার স্ত্রী ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করলে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি উচ্চ আদালত তাদের সাজা বাতিল করে রায় দেয়। দুদক তখন সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে।
ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাই কোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাই কোর্টে শুনানির নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।
সেই শুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ হাই কোর্ট বেঞ্চ একটি ধারায় হাজী সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখে এবং অন্য ধারায় ৩ বছরের সাজা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়।
আর আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মারা যাওয়ায় বিচারিক আদালতের রায়ে দণ্ডিত হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগমের আপিলটি বাতিল করা হয়।
পুরান ঢাকার সংসদ সদস্য হাজী সেলিম আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উপদেষ্টমণ্ডলীতে রয়েছেন। বিগত কমিটিতে তিনি সদস্য ছিলেন। তার আগে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।