দেশের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর জোট বাম গণতান্ত্রিক জোট থেকে গণসংহতি আন্দোলন ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জোটের নেতারা বলেন, ‘দেশের সংকট সমাধানে লুটেরা পুঁজিপতি শ্রেণীর নিষ্ঠুর শোষণমূলক ব্যবস্থা, বর্তমান স্বৈরতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেন্দ্রীক লুটেরা ধনিক শ্রেণীর দ্বি-দলীয়, অপরাজনীতির বাইরে জনগণের নিজস্ব বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি সমাবেশ তৈরী করার জন্য বাম গণতান্ত্রিক জোট আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা করছে। লুটেরাদের বিরুদ্ধে বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তিই জনগণের প্রকৃত ভরসা হয়ে উঠতে পারে। জোটের আদর্শ পরিপন্থী কোন দলের সাথে জোটভূক্ত কোন দল এক মঞ্চে যেতে পারে না।‘
তাঁরা আরও বলেন, ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতানায় সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করতে বাম গণতান্ত্রিক শক্তির নেতৃত্বে সকল গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক দেশপ্রেমিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েই তাদের জোটের ঘোষণা দিয়েছিল।‘
জোটের মূলরেখা অমান্য করে কেউ অন্য মেরুতে যুক্ত হতে চাইলে বাম জোটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়। সে কারণে দল দুটির বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে আগামী দিনে দুঃশাসনবিরোধী লড়াইয়ে দৃঢ় ভূমিকা রাখার জন্য দলগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চান তাঁরা।
সদস্যপদ স্থগিত হওয়া দল দুটির নেতারা জানিয়েছেন, সাতটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সমন্বয়ে শিগগিরই নতুন একটি মঞ্চ গড়ে তুলছেন তাঁরা। নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণ অধিকার পরিষদের নুরুল হক ও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে এই দল দুটির নেতারা এর মধ্যে বৈঠক করেছেন।
গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা দীর্ঘদিন ধরেই বাম জোটের পাশাপাশি অপরাপর গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে কর্মসূচির ভিত্তিতে আরও একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ এপ্রিল গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও জেএসডি এই ৭টি দলের শীর্ষ নেতারা এক বৈঠক থেকে নতুন রাজনৈতিক মঞ্চের ঘোষণা দেয়।
২০১৮ সালের ১৮ জুলাই বাম গণতান্ত্রিক জোট গড়ে তোলা হয়েছিল। দুই দলের সদস্যপদ স্থগিত হওয়ায় এখন এই জোটে সিপিবি ছাড়াও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন রয়েছে।