সীতাকুণ্ডে কন্টেনার ডিপোতে আগুনঃ মৃত্যু বেড়ে ৩২

সীতাকুণ্ডে কন্টেনার ডিপোতে আগুনঃ মৃত্যু বেড়ে ৩২

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি একটি কন্টেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জন হয়েছে; দগ্ধ ও শতাধিক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নগরী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কদমরসুল এলাকায় বিএম ডিপো নামের ওই কন্টেইনার টার্মিনালে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগে। পরে রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সবগুলো ইউনিট চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় রাতে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে অগ্নি নির্বাচক গাড়ি পাঠাতে অনুরোধ করা হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও বারবার বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। ডিপোতে রাসায়নিক থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে।

রাসায়নিকের কারণে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকে। রোববার বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত মোট ৩২ জনের মরদেহ মার্গে এসেছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী।

নিহতদের মধ্যে পাঁচজনকে শনাক্ত করা গেছে। তারা হলেন কুমিরা ফায়ার স্টেশনের নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে কর্মরত বাঁশাখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামের মনিরুজ্জামান (৩২), একই উপজেলার চারিয়ার নাপুরা এলাকার মাহমুদুর রহমানের ছেলে মো. মহিউদ্দীন (২৪), ভোলা জেলার হাবিবুর রহমান (২৬) ও রবিউল আলম (১৯)।  তাদের মধ্যে মহিউদ্দীন বেসরকারি পার্ক ভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ফায়ার সার্ভিসের দগ্ধ ও আহত ১৫ জন কর্মীকে চট্টগ্রাম সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আরো দুজন কর্মীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

আহত ও দগ্ধদের মধ্যে অন্তত ১১ জন পুলিশও রয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই পুলিশ সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

 

চট্টগ্রাম মেডিকেলের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন বেরসকারি হাসপাতালেও রোগীদের নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াস রাতেই আহতদের সেবায় নগরীর চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

 

নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা এবং প্রাথমিকভাবে আহতদের ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সব বিভাগের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্রুত তদন্ত কমিটি করা হবে।

 

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা ও ফেনীর ২৫টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানিও অগ্নি নির্বাপণ ও উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছেন।