বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ আজ ৯ জুন ২০২২ এক বিবৃতিতে তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, মহা আড়ম্বরের বৃহৎ বাজেটের বোঝা জনগণের উপর চাপিয়ে সরকার কৃতিত্ব নিতে চায়। ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার এই বাজেট আয়তনে অনেক বড় কিন্তু তাতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর কৃষির জন্য আনুপাতিক বরাদ্দ বাড়ে নি। শিক্ষায় গত বাজেটের ১১.৬৯ শতাংশ ছিল এবার তা ১১.৬৫ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ ০.০৪ শতাংশ কমেছে। করোনায় বিপর্যস্ত শিক্ষা খাত ও শিক্ষার্থীদের জন্য বাজেটে কোন নির্দেশনা নেই। দুর্বল ও দুর্নীতিগ্রস্থ স্বাস্থ্য খাতও গুরুত্ব পায় নি। এত আলোচনা-সমালোচনার পরও স্বাস্থ্যে বরাদ্দ ৫.৪ শতাংশের বেশি হয় নি। করোনাকালে দেশকে টিকিয়ে রাখার স্বীকৃতি দিলেও বাজেট বরাদ্দে কৃষিও গুরুত্ব পায় নি। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কোন নতুন নির্দেশনা নেই। সাধারণ মানুষের কর যোগ্য আয় সীমা বাড়ে নি বরং বৃহৎ পুঁজিপতিদের কর্পোরেট ট্যাক্স আড়াই শতাংশ কমেছে। এসি রেস্তোরার ভ্যাট ৫ শতাংশ কমিয়ে এসি, নন এসি রেস্তোরার ট্যাক্স সমান করা হয়েছে। সাধারণত দরিদ্র মানুষেরাই নন এসি রোস্তোরায় খেয়ে থাকেন। সবচেয়ে বড় কথা এই বাজেটে টাকা পাচারকে স্বীকার করে নিয়ে তাঁকে আইনি বৈধতা দেয়া হয়েছে। কেউ ৭.৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে পাচার করা টাকা ফেরত আনতে পারবে, এর ফলে টাকা পাচার তো কমবেই না বরং পাচারে আরো উৎসাহিত হবে।
এবারের বাজেটও ঋণ নির্ভর এবং ঋণের সুদ পরিশোধেই বাজেটের এক বড় অংশ ব্যয় করা হবে। এ ছাড়া সামাজিক সুরক্ষা খাতেও বরাদ্দ তেমন বাড়েনি বরং বরাদ্দ বেশি দেখাতে সরকার স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, সঞ্চয়পত্রের সুদ, সরকারি চাকুরেদের অবসরকালীন পেনশনের টাকা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতাকেও এ খাতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যা একটা চাতুরী ছাড়া আর কিছু না।
তিনি বাজেটে সাধারণ মানুষের উপর করের বোঝা না বাড়িয়ে যার আয় যত বেশি তার কর তত বেশি এই নীতি গ্রহণের আহ্বান জানান। দ্রব্যমূল্যের চাপে পিষ্ট দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের জীবনে বাজেট আরও আঘাত নামিয়ে আনবে উল্লেখ করে তিনি বাজেট সংশোধনের দাবি জানান।