নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে শ্রীলঙ্কায় পার্লামেন্ট বৈঠক

নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে শ্রীলঙ্কায় পার্লামেন্ট বৈঠক

শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করতে দেশটির পার্লামেন্টে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে আর সংকটে পড়া দেশটিকে কিছুটা স্বস্তি দিতে একটি জাহাজ জ্বালানির চালান নিয়ে হাজির হয়েছে।

প্রথমে মালদ্বীপ ও পরে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যাওয়া প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগপত্র শুক্রবার পার্লামেন্ট গ্রহণ করেছে।

এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আইনপ্রণেতাদের শনিবারের বৈঠককে সামনে রেখে পার্লামেন্টে যাওয়ার রাস্তাজুড়ে অ্যাসল্ট রাইফেলসহ শতাধিক পুলিশ ও নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করতে রাস্তাটিতে ব্যরিকেড বসানো হয়েছে এবং জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পার্লামেন্টমুখি আরেকটি রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনী টহল দিচ্ছে। তবে কোথাও প্রতিবাদের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।

আইনপ্রণেতারা নির্ধারণ করেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন। তার আগে পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করবেন রাজাপাকসেদের মিত্র রনিল বিক্রমাসিংহে। পার্লামেন্টে তার দলের একমাত্র প্রতিনিধি রনিল ছয়বার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।

শুক্রবার ক্ষমতাসীন দল পোদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) রনিলকে (৭৩) তাদের দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে। কিন্তু সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা তারও পদত্যাগ দাবি করতে থাকায় তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ফের অস্থিরতা শুরু হওয়ার শঙ্কা আছে।

বিরোধীদল তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সাজিথ প্রেমাদাসাকে (৫৫) মনোনীত করেছে। আর ক্ষমতাসীন দলের জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা সাবেক সাংবাদিক দুল্লাস আলাহাপেরুমাকে (৬৩) সম্ভাব্য ‘ডার্ক হর্স’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত হলেও তিনি সব হিসাবনিকাশ উল্টে দিতে পারেন বলে অনেকের ধারণা।

শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করার পর বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নেমে এসে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। কয়েক মাস ধরে চলা এ বিক্ষোভ গত সপ্তাহে চরম আকার ধারণ করে, এ সময় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কলম্বোর সরকারি ভবনগুলো দখল করে নেয়। তারা মূল্যস্ফীতি, নিত্য প্রয়োজনী পণ্যের ঘাটতি ও দুর্নীতির জন্য ক্ষমতাসীন রাজাপাকসে পরিবারকে দায়ী করে।

২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে দিনের পর দিন জ্বালানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, বিদেশি মুদ্রার রির্জার্ভ কমতে কমতে শূন্যের কাছাকাছি চলে যায় আর গতমাসে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে ৫৪ দশমিক ৬ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়।