শিরোনাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলন নিত্যপণ্যের দাম কমানো, রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবিতে গাইবান্ধায় বাম জোটের বিক্ষোভ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জরুরী পদক্ষেপের দাবি বাম জোটের জ্বালানি খাতে এখনই ৪০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব খাওয়ার স্যালাইনের সহ-উদ্ভাবক বাংলাদেশের বন্ধু রিচার্ড ক্যাশ মৃত্যু বরণ করেছেন বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া যাবে তিনবার  কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে পদত্যাগের আলটিমেটাম  বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা ফেরাতে  আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক সহযোগিতায় রাজি শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক জাগরণ যাত্রার ডাক সিপিবি’র ৪ঠা নভেম্বর সংবিধান দিবস এবং ঐতিহাসিক ৭ই মার্চকে অস্বীকার করা, মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস পরিপন্থী : সিপিবি

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও নিউমার্কেটে ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশে ছাত্রলীগের হামলা

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও নিউমার্কেটে ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশে ছাত্রলীগের হামলা

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করতে গিয়ে নগরীতে আবারও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন ছাত্র ও যুব ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। বেধড়ক পিটুনিতে ছাত্র ও যুব ইউনিয়নের অন্তত ৯ জন নেতা আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত ছয়জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক থানায় আটকে রাখার পর তাদের ছেড়েও দেওয়া হয়।

 

শনিবার (১৩ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরীর কোতোয়ালী থানার নিউমার্কেট মোড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ স্বীকার করেছে।

 

গুরুতর আহত চারজন হলেন- চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক টিকলু কুমার দে, কোতোয়ালী থানার শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ অর্ণব এবং যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাখারভ হোসেন সেবক ও জেলার সহ সভাপতি প্রীতম দাশ। তাদের চট্টগ্রাম সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

এছাড়া চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এ্যানি সেন, কোতোয়ালী থানার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অরিত্র ভট্টাচার্য্য, হালিশহর থানার সভাপতি মিজানুর রহমান আরিফ, পাহাড়তলী থানার দফতর সম্পাদক সুমন রহমান এবং জেলা যুব ইউনিয়নের সদস্য অভিজিৎ বড়ুয়া।

 

এর আগে, শনিবার সকালে বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়ায় স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধনে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক-বর্তমান পাঁচ নেতাসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। আহত নেতাদের মধ্যে আছেন- ছাত্র ইউনিয়নের কলেজ শাখার আহবায়ক হিমেল চৌধুরী, যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন আরাফাত, দক্ষিণ জেলার সাবেক সভাপতি সেহাব উদ্দিন সাইফু ও সাজ্জাদ হোসেন এবং দক্ষিণ জেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি অনুপম বড়ুয়া পারু।

 

এর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে বিকেল ৫টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় জেলা ছাত্র ইউনিয়ন ও যুব ইউনিয়ন। উভয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রথমে নগরীর আমতল এলাকায় শাহ আমানত মার্কেটের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা নিউমার্কেট মোড়ে গিয়ে সমাবেশ শুরু করে।

 

সমাবেশে হামলার বর্ণনা দিয়ে জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এ্যানি সেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছিলাম। পেছন থেকে প্রায় ১০০ তরুণ-যুবক জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা করে। তারা লোহার রড, লাঠি, ক্রিকেটের স্ট্যাম্প এবং হেলমেট দিয়ে আমাদের কয়েকজনকে রাস্তায় ফেলে পেটাতে থাকে। প্রথমে পুলিশ হামলার ঘটনা দেখেও নির্বিকার থাকে। পরে পুলিশ এগিয়ে এলে হামলাকারীরা বলে- এরা জামায়াত শিবিরের লোক, সরকার বিরোধী। এদের গ্রেফতার করতে হবে। তখন পুলিশ আমাদের ছয়জনকে আটক করে ভ্যানে তুলে কোতোয়ালী থানায় নিয়ে আসে।’

 

সরকারি সিটি কলেজ শাখা ছাত্র সংসদের ভিপি পরিচয় দিয়ে এক যুবক হামলায় নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ করেন এ্যানি সেন।

 

হামলার শিকার নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কোতোয়ালী থানা ছাত্র ইউনিয়নের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অরিত্র ভট্টাচার্য্য একজন প্রতিবন্ধী তরুণ জানার পরও তাকে বেধড়ক পেটানো হয়। নেতাকর্মীরা বারবার তাকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধের পরও রেহাই পাননি অরিত্র। খবর পেয়ে তার বাবা সিপিবি নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য্য ঘটনাস্থলে যান। তিনি অরিত্রকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

প্রদীপ ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আমার ছেলে একজন প্রতিবন্ধী। পুলিশের সামনে আমার ছেলেটাকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে। পুলিশ তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি। আমি এই হামলার বিচার চাই।’

 

এদিকে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও আটকের খবর পেয়ে জেলা কমিউনিস্ট পার্টি, যুব ইউনিয়ন ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা কোতোয়ালী থানায় জড়ো হন। অন্যদিকে ছাত্রলীগের শ’খানেক নেতাকর্মীও থানার সামনে জড়ো হন। তারা আহতদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে চাপ প্রয়োগ করতে দেখা গেছে।

 

ঘণ্টাখানেক পর পুলিশ আহত চারজনকে ভ্যানে তুলে চট্টগ্রাম সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ চলে যায়।

 

জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্র ইউনিয়ন সমাবেশ করছিল। সেখানে ছাত্রলীগ এবং সরকারের বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্লোগান দেয়া হয়। ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী এর প্রতিবাদ করলে তাদের মধ্যে হাতাহাতি ‍শুরু হয়। এতে চারজন সামান্য আহত হয়েছেন। আমরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে আহত চারজনকে প্রথমে থানায় নিয়ে আসি। এরপর তাদের হাসপাতালে পাঠাই। এ বিষয়ে কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে থানায় উপস্থিত কোতোয়ালী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ জুনায়েদ বলেন, ‘মিছিল-সমাবেশে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তারা ছাত্রলীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে আপত্তিকর ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছিল। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি।’