মার্কিন ভিসা নীতিতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ওপর কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে না। বাংলাদেশে মার্কিন ভিসানীতি বাস্তবায়ন শুরু হলেও তাতে পুলিশ বাহিনীর কাজের গতি কমবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের প্রধান উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন।
রোববার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের একথা বলেন ডিএমপির মুখপাত্র।
পুলিশ আইনের মধ্য থেকেই কাজ করে। ভিসা নীতি দায়িত্ব পালনে কোনো ব্যাঘাত ঘটাবে না উল্লেখ করে ফারুক হোসেন বলেন, ‘মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে আমরা সংবাদ দেখেছি যে, তারা বাংলাদেশে ভিসানীতি কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করেছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথা স্পষ্টভাবে বলা আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে তারা ভিসানীতি প্রয়োগ শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন কোন সদস্যের ওপর তারা ভিসানীতি প্রয়োগ করেছে তার তালিকা এখনো আমরা পাইনি। সেখানে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা থাকতে পারেন বা অন্য বাহিনীর সদস্য থাকতে পারেন। এছাড়া বর্তমানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য বা অন্য বাহিনীর সদস্যরাও থাকতে পারেন।’
ডিসি ফারুক হোসেন বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে ভিসানীতি আসবে তারা হয়তো আমেরিকা যেতে পারবেন না। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশের দুই লাখেরও বেশি সদস্য রয়েছেন। এই পুলিশ সদস্যদের মধ্য থেকে কতজন আমেরিকা যাচ্ছেন? খুবই নগণ্য কিছু লোক হয়তো আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন অথবা তাদের ছেলেমেয়েদের পাঠানোর চিন্তা করেন।’
এই দৃষ্টিকোণ থেকে মার্কিন ভিসানীতিতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী যেভাবে কাজ করে, তাদের কাজের ওপরে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা মনে করি পুলিশ বাহিনী আইনের মধ্যে থেকে মানবাধিকার সমুন্নত রেখে কাজ করে। এর আগেও করেছে এবং ভবিষ্যতেও করতে থাকবে। সুতরাং এই ভিসানীতির কারণে আমাদের কাজের গতি কোনোভাবেই থেমে যাবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তো আইনের মধ্য থেকেই কাজ করি। আগামী যে নির্বাচন আসবে, নির্বাচনে পুলিশের যেই দায়িত্ব থাকবে, কেন্দ্রের নিরাপত্তা দেওয়া- সেই নিরাপত্তা দেওয়ার কাজে আমাদের সঙ্গে আরও অন্য বাহিনীও কাজ করে। আমাদের ওপর আইনত যে দায়িত্ব থাকবে, নির্বাচন কমিশন থেকে যেই দায়িত্ব দেওয়া হবে- সেই দায়িত্ব আমরা পালন করবো। সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি না, ভিসানীতি আমাদের কাজের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।’
বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি ঘোষণা করে গত ২৪ মে। এর চার মাসের মাথায় গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাদানে দায়ী ও জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এসব ব্যক্তির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দলের সদস্যও রয়েছেন।