বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে কারিগরি ও নীতিগত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংক। ওয়াশিংটনে চলমান আই এম এফ এর বার্ষিক সভায় যোগদানকারী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথা জানান। আগেও সংস্থা দুটি এমন সহযোগিতার কথা একাধিকবার জানিয়েছে; কিন্তু এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কার্যকর তেমন অগ্রগতি হয়নি বলে জানা গেছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সদর দপ্তরে দেশের চলমান অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের কাছে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে ইতিবাচক সাড়া মিলছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভায় তিনি আরও জানান, নানা সংকট আর চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
২২ অক্টোবর, বার্ষিক সভার দ্বিতীয় দিন বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি নিয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট প্রকাশ করে আইএমএফ। সংস্থাটির প্রক্ষেপনে এ বছর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৪ শতাংশ হতে পারে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে এবারের বার্ষিক সভা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। তাই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আস্থা ফেরাতে একাধিক পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করছেন বাংলাদেশের আর্থিক খাতের নতুন নীতিনির্ধারকরা।
এদিন প্রকাশিত গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে বলা হয়, এখনো বহু দেশে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে মুদ্রা ব্যবস্থাপনা ও চড়া সুদহার নিয়ে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বাংলাদেশকে এ খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সহায়তা দেবে আইএমএফ।
এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের উন্নতির ধারাবাহিকতার স্বীকৃতি পেল আরও একবার বিশ্বমঞ্চে। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বৈঠকে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা সামষ্টিক অর্থনীতি এবং মানব উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জনের প্রশংসা করেছেন।
বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, দেশ থেকে অর্থ লোপাট এবং পাচারের পরিমাণ নির্ধারণে কাজ চলছে, শিগগির তার হিসাব জানা যাবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর মতে সঠিকভাবে ব্যয় করতে পারলে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে যে কোনো পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়নে আর্থিক এবং কারিগরি সহযোগিতা দিতে সম্মত হয়েছে উন্নয়ন সহযোগীরা।