রাজধানীর পুরানা পল্টনে গত ১২ই অক্টোবর রবিবার ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া, নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও বে টার্মিনাল পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগে আগামী ডিসেম্বরে চুক্তি সই করবে সরকার। চুক্তি অনুযায়ী লালদিয়া টার্মিনাল ৩০ বছরের জন্য, আর বাকি দুটি ২৫ বছর মেয়াদে বিদেশি কোম্পানিগুলোর হাতে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি যুবনেতা খান আসাদুজ্জামান মাসুম এবং সাধারণ সম্পাদক যুবনেতা জাহাঙ্গীর আলম নান্নু, দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকিতে ফেলে চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেয়ার দেশবিরোধী চক্রান্ত রুখে দাঁড়াতে দেশবাসীকে আহ্বান জানান।
যুব নেতৃবৃন্দ বলেন, ড. ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিয়ে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দরটি ৩০ বছরের জন্য বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য চুক্তি করতে যাচ্ছেন। বন্দর উন্নয়নের নামে বিদেশি কোম্পানীর সাথে করা গোপন এই চুক্তির কোন কিছুই এখন পর্যন্ত জাতিকে জানানো হয়নি। এই চুক্তির কারণে এই অঞ্চলের ভূ রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরিতে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দীর্ঘদিনের যে চক্রান্ত তা বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে সরকার। ইউনূস সাহেব বলছেন এতে বন্দরের উন্নতি হবে কিন্তু এই বন্দর ইতোমধ্যে বিশ্বমানের ও লাভজনক। ইজারা দেওয়া কোম্পানির লুটপাটের অংশ হিসাবে ইতোমধ্যে বন্দরের শুল্ক ৪১ ভাগ বাড়ানোর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। ক্ষমতার জন্য কামড়াকামড়ি করা রাজনৈতিক দলগুলো এটা নিয়ে কোন কথা বলছে না, প্রতিবাদ করছে না? তারা সর্বত্রে ষড়যন্ত্র খুঁজে পান কিন্তু এখানে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ থাকায় নিশ্চুপ থাকছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকিতে ফেলে চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেয়ার সিদ্ধান্ত অবৈধ ও গণবিরোধী। জনমত উপেক্ষা করে, দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে, লাভজনক বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার যেকোনো চক্রান্ত আমরা দেশবাসী প্রত্যাখ্যান করছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট দায়িত্বে রয়েছে, জাতীয় সম্পদ ইজারা বা বিক্রি করার কোন অধিকার এই সরকারের নেই। ছাত্র যুব সহ সকল দেশপ্রেমিক সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠনকে এই গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনবিক্ষোভ গড়ে তুলতে ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।
জাতীয় সম্পদ রক্ষার লড়াইয়ে সামিল হোন। দেশ বাঁচান, বন্দর বাঁচান। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

