পি কে হালদার ও তাঁর সহযোগীরা গত ১০ বছরে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে ৯৩৩ কোটি টাকার জমি, ফ্ল্যাট ও হোটেল কেনেন। এর মধ্যে জমি কিনেছেন ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ। এই সম্পদের বাজারমূল্য প্রায় ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। নিজের নামে তিনি জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ। দলিলে এসব জমির দাম ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা দেখানো হলেও প্রকৃত বাজারমূল্য প্রায় ২২৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া ধানমন্ডিতে তাঁর নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। দুদকের অভিযোগপত্র থেকে এসব জানা যায়।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, পি কে হালদার তাঁর নিকটাত্মীয় পূর্ণিমা রানী হালদারের নামে উত্তরায় একটি ভবন নির্মাণ করেন, যার দাম প্রায় ১২ কোটি টাকা। পূর্ণিমার ভাই উত্তম কুমার মিস্ত্রির নামে তেজগাঁও, তেজতুরী বাজার ও গ্রিন রোডে ১০৯ শতাংশ জমি কেনেন, যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকা। পি কে হালদার কাগুজে কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডসের নামে কক্সবাজারে দুই একর জমির ওপর র্যাডিসন নামে আটতলা হোটেল নির্মাণ করেন, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৪০ কোটি টাকা। তাঁর খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী ও অনঙ্গ মোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কেনেন, যার দাম প্রায় ১৬৭ কোটি টাকা।
তবে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের পর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডি বলছে, কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিপুল সম্পদ কিনেছেন তিনি। কলকাতার বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় তিনি ও তাঁর সহযোগীদের বেশ কয়েকটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন গতকাল জানান, পি কে হালদার ও তাঁর সহযোগীদের কানাডায় অর্থ পাচারের তথ্য জানা গেলেও ভারতে এত সম্পদ পাচারের তথ্য এত দিন কারও জানা ছিল না। এখন কলকাতায় তাঁর অবৈধ সম্পদের খবর বেরোচ্ছে। তাই আদালতের অনুমতি নিয়ে তিনিসহ অন্যদের ভারতসহ অন্যান্য দেশে থাকা অবৈধ সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
দুদকের প্রধান আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, পি কে হালদারকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অর্থ পাচার মামলায় অর্থের পূর্ণাঙ্গ গতিপথ বের করেই আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে দুদক।