যান্ত্রিক ত্রুটি ও গ্যাস–সংকটে নয় দিন ধরে উৎপাদন বন্ধ জামালপুরের সরিষাবাড়ীর যমুনা সার কারখানায়। এর মধ্যে পাঁচ দিন গেছে কারখানার অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে সমস্যার কারণে। এর পর থেকে চলছে গ্যাস–সংকট। গ্যাসের পর্যাপ্ত চাপ না থাকায় উৎপাদন শুরু করা যাচ্ছে না। কারখানা–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী রবি মৌসুমে তীব্র সারসংকট দেখা দিতে পারে।
উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দিতে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী কারখানাটি। যমুনা সার কারখানা কোম্পানি লিমিটেড (জেএফসিএল) সূত্রে জানা গেছে, ৭ মে হঠাৎ অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে বিকট শব্দ হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ ওই দিনই দ্রুতগতিতে অ্যামোনিয়া প্ল্যান্ট বন্ধ করতে সক্ষম হয়। ১০ মে প্ল্যান্ট মেরামত সম্পন্ন হয়। এর পর থেকে পাওয়া যাচ্ছে পর্যাপ্ত গ্যাস।
এর আগে যান্ত্রিক মেরামতের জন্য গত ২৭ মার্চ ভোরে কারখানার ইউরিয়া প্ল্যান্ট বন্ধ করা হয়। ২০ দিন যান্ত্রিক মেরামত শেষে ১৬ এপ্রিল কারখানা চালু করা হলে তখনো গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহ পাওয়া যায়নি। ফলে স্যার উৎপাদন সম্ভব হয়নি। ১ মে থেকে গ্যাস সরবরাহ পাওয়া গেলে শুরু হয় সার উৎপাদন। কিন্তু এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও দেখা দেয় অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে ফাটল ও গ্যাস–সংকট।
চলতি বছরে নানা সমস্যায় ব্যাহত হচ্ছে যমুনা সার কারখানার সার উৎপাদন। ২০২১-২২ অর্থবছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি) এই কারখানাকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন সার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে। এ পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার টন। এর মধ্যে মজুত রয়েছে ৩৭ হাজার টন। কারখানাটি পুরোনো হওয়ায় দৈনিক উৎপাদন ১ হাজার ৭০০ টন থেকে ১ হাজার ৩০০ টনে নেমে এসেছে। ফলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে বড় শঙ্কায় আছে যমুনা সার কারখানা।
কারখানার মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আবদুল হাকিম গতকাল রোববার জানান, কারখানায় নয় দিন ধরে সার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। যান্ত্রিক মেরামত কাজ হলেও গ্যাস সরবরাহ না দেওয়ায় সার উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে চললে আগামী রবি মৌসুমে তীব্র সারসংকটের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।