প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শুরু হয়নি আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ের

প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শুরু হয়নি আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ের

 

 

 

২০১৭ সালে নেওয়া হয়েছিল ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি। পাঁচ বছরে শেষ করতে সেই সময় আগামী জুন মাসে শেষ হচ্ছে; কিন্তু প্রকল্পের মূল কাজই এখনও শুরু হয়নি।

তাই প্রকল্পের মেয়াদ আবার ৪ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে এসেছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেতু কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রায় ৬৫২ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর আবেদন। তাতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। এই ব্যয়ের ১০ হাজার কোটি টাকাই চীন থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে।

চীন থেকে অর্থ না পাওয়াকেই প্রকল্পের কাজ আটকে থাকার কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।

“২০১৭ সালে একনেক বৈঠক থেকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হলেও চীনের সঙ্গে চুড়ান্ত ঋণ চুক্তি করতে না পারায় প্রকল্পটির কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।”

সেই জটিলতা কাটার পর প্রকল্প সংশোধনে প্রস্তাব গেছে সেতু বিভাগ থেকে।

এই প্রকল্পের আওতায় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় এবং ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে।

১১ কিলোমিটার দীর্ঘ র‌্যাম্প থাকবে এই প্রকল্পে। উড়াল সড়কের উভয় পাশে চার লেইনের ১৪ দশমিক ২৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক হবে।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়, এশিয়ান হাইওয়ে অ্যালাইনমেন্টের মধ্যে প্রস্তাবিত ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে।

ঢাকার সঙ্গে ৩০ জেলার সংযোগ স্থাপনকারী আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল-চন্দ্রা সড়কে যানজট কমানোই আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির লক্ষ্য।

 পাঁচ বছর আগে প্রকল্পটি অনুমোদনের পর চীনের শর্ত অনুযায়ী সে দেশের কোম্পানি চায়না মেশিনারিজ করপোরেশনকে (সিএমসি) ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রকল্পের মুল কাজের সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ চীনা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্প প্রস্তাবনায় প্রস্তাবিত চীনা ঋণ তার চেয়ে একটু বেশি ধরা হয়েছিল। এই সমস্যার সমাধান করে শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে এই ঋণ চীন সরকারের অনুমোদন পায়। এরপর ২০২১ সালের অক্টোবরে চীনা এক্সিম ব্যাংকের অনুমোদন পাওয়া যায়।

প্রথমবার প্রকল্প প্রস্তাবে ১৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা ব্যয়ের ফর্দে বলা হয়েছিল, এর ৫ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার দেবে, বাকি ১০ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা চীন থেকে ঋণ হিসেবে আসবে। সংশোধনী প্রস্তাবে চীনের অর্থায়ন কমিয়ে এখন ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। আর ব্যয় বাড়ছে বাংলাদেশ সরকারের।

এদিকে ঋণচুক্তির জটিলতা কাটার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের মূল নকশা তৈরি করতে দুই কোম্পানিকে নিয়োগ দেয়।

প্রকল্পটিতে বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে তার সেতু কর্তৃপক্ষের মূল কাজ হচ্ছে জমি অধিগ্রহণ করে দেওয়া। এর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। তার মধ্যে শুধু জমি অধিগ্রহণেই খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় মাটি উন্নয়নের কাজ পরিচালনার ভারী যানবাহন ও যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে।