বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি বিক্রমাসিংহের

বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি বিক্রমাসিংহের

শ্রীলঙ্কা সংকটের শিগগির সমাধান হচ্ছে না। এখনো কিছুসংখ্যক বিক্ষোভকারী দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এলাকায় অবস্থান করছেন। বিক্ষোভকারীরা নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে বিক্রমাসিংহে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। খবর এএফপি ও বিবিসির।

 

গতকাল বুধবার শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর মোট ভোটের চেয়ে ৪৯ ভোট বেশি পান। পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও বিক্রমাসিংহে তাঁর দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে অজনপ্রিয়।

 

 

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এলাকায় এখনো স্বল্পসংখ্যক বিক্ষোভকারী অবস্থান করছেন। সেখানকার ভবনের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে তাঁদের ‘রনিল বিদায় হও’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।

 

তবে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একধরনের হতাশা লক্ষ করা যায়। এ প্রসঙ্গে নুজলি হামিম নামের শীর্ষস্থানীয় এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘টানা চার মাসের আন্দোলনে লোকজন ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।’

 

গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীরা অধিকাংশ সরকারি ভবনের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেন। তবে ‘গল ফেস’ নামে পরিচিত সমুদ্রতীরবর্তী ছোট্ট এলাকায় অবস্থিত প্রেসিডেন্টের সচিবালয় এখনো বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে।

 

শ্রীলঙ্কার সংবিধান পরিবর্তন, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কমানোসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন নুজলি হামিম। জনগণের ‘হাঁপ ছেড়ে বাঁচার’ ব্যবস্থার পর এক বছরের মধ্যে নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান তিনি।বিক্রমাসিংহের শক্তিশালী পূর্বসূরিদের সফলভাবে উৎখাত করেন বিক্ষোভকারীরা। এখন শ্রীলঙ্কাকে বিক্রমাসিংহের সঙ্গে ‘আপস’ করতে হচ্ছে দেখে হতাশ নুজলি হামিম। তবে তিনি বলেন, যখন জাতীয় নির্বাচন হবে, তখন জনগণ বুঝতে পারবে, কী হিসাব করে ভোট দিতে হবে।

 

অনিল নামের এক ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘এই লোকগুলো ৭০ বছর ধরে দেশ শাসন করেছেন। তাঁরা চুরি করে আসছেন। আমরা কীভাবে আশা করি, ভালো কিছু হবে।’

অনিল আরও বলেন, তাঁদের উচিত, এই লোকগুলোকে ক্ষমতা থেকে তাড়ানো। তাঁরা যদি পরিবর্তন চান, তাহলে নতুন কাউকে প্রয়োজন।

 

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্রমাসিংহে গতকাল প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

 

বিক্রমাসিংহে বলেছেন, বিক্ষোভের নামে কেউ অগণতান্ত্রিক পন্থার আশ্রয় নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সহিংসতার কাছে মাথা নত করবেন না বলে জানান ছয়বারের এই প্রধানমন্ত্রী।

 

রাজধানী কলম্বোয় একটি বৌদ্ধমন্দিরে প্রার্থনা শেষে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘তোমরা যদি সরকার উৎখাতের চেষ্টা করো, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দখল করে রাখো, তবে তা গণতন্ত্র নয়। এগুলো আইনের পরিপন্থী কাজ।’

 

বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনপ্রত্যাশী নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠদের আকাঙ্ক্ষা ভূলুণ্ঠিত করতে চাওয়া স্বল্পসংখ্যক বিক্ষোভকারীকে আমরা কোনো সুযোগ দেব না।’

 

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরপরই বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশের বিশেষ শাখা ও সেনা ইউনিটের সঙ্গে দেখা করেন। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকের সুরক্ষা দেওয়ায় তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।