প্রগতি লেখক সংঘের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

গোলাম কিবরিয়া পিনু সভাপতি, দীপংকর গৌতম সাধারণ সম্পাদক


প্রগতি লেখক সংঘের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

'ভয়ের মাঝে অভয় বাজাও, সাহসী প্রাণে চিত্ত জাগাও' স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এবারের সম্মেলন থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চাবিরোধী সকল কালাকানুন বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে।

উদ্বোধন ঘোষণা শেষে সম্মেলনের একটি র‌্যালি সোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর থেকে শুরু করে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর ঘুরে উচ্চতর মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এসে শেষ হয়।

সংগঠনের সভাপতি কবি গোলাম কিবরিয়া পিনুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী আলোচনা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ ও অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক। এ অধিবেশনে সূচনা বক্তব্য দেন ৪র্থ জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের আহ্বায়ক কথাসাহিত্যিক শামসুজ্জামান হীরা, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি-সাংবাদিক দীপংকর গৌতম। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সহকারী সাধারণ সম্পাদক অভিনু কিবরিয়া ইসলাম।

আলোচনা অনুষ্ঠানে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দেশে ও সারা পৃথিবীতে ভয়ের রাজত্ব চলছে। এখানে জীবিকার নিশ্চয়তা নেই, জীবনের নিশ্চয়তা নেই। বিপন্নতা গ্রাস করছে। সর্বোপরি রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ বিরাজ করছে সর্বত্র। এই ফ্যাসিবাদের কারণে মানুষ মুখ খুলতে ভয় পায়। মানুষ আতঙ্কের মধ্যে থাকে। এই ভয়ে বিপরীতে আমাদের সাহসের কথা বলতে হবে। আমাদের সাহস নির্ভর করে সংঘবদ্ধতার উপর। দেশের প্রগতিশীল লেখকরা সংঘবদ্ধভাবে সেই ভয়ের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার লড়াই করছে। তাদের হাত দিয়ে সমাজ বদল ঘটবে।

তিনি আরো বলেন, ' বিধ্বংসী উন্নয়নের চেয়ে নদীর অবাধ প্রবাহ সভ্যতার জন্য অপরিহার্য। সেজন্য প্রাণ-প্রকৃতি স্বাভাবিক গতিময়তা নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে সাহিত্যের মুক্তি, মানুষের মুক্তি প্রাণ-প্রকৃতির মুক্তির আন্দোলন সব এক ও অভিন্ন। মূলত সমস্ত মুক্তির আন্দোলনই পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলন। যেহেতু পুঁজিবাদ এই মুহূর্তে সমস্ত সংকটের মূলে সেহেতু পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনে লেখক শিল্পী-সাহিত্যিকদের আরো সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে।'

সম্মেলনের পর দুপুর ২টা থেকে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। কাউন্সিলে বিভিন্ন রিপোর্টের উপর আলোচনা করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষকবৃন্দ। কাউন্সিল অধিবেশনে গোলাম কিবরিয়া পিনুকে সভাপতি ও দীপংকর গৌতমকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছরের জন্য নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচিত হয়।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সহসভাপতি-শামসুজ্জামান হীরা, সাখাওয়াত টিপু, এ কে শেরাম, জাকির হোসেন, ইয়াজদানী কোরায়শী, মাইনুদ্দিন পাঠান, সহ সাধারণ সম্পাদক-অভিনু কিবরিয়া ইসলাম, মাধব রায়, কোষাধ্যক্ষ- দীনবন্ধু দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক-মাহবুবুল হক, দপ্তর সম্পাদক- সোহেল তারেক, প্রচার সম্পাদক- মো. তারেকুজ্জামান, প্রকাশনা ও গবেষণা সম্পাদক- হাবীব ইমন, সাহিত্যসভা ও অনুষ্ঠান বিষয়ক সম্পাদক-শান্তা মারিয়া, আন্তর্জাতিক সম্পাদক- প্রশান্ত কুমার মণ্ডল, সদস্য- মতিন বৈরাগী, ফারুক মাহমুদ, সিদ্দিক আহমেদ, সুদীপ্ত হান্নান, তপন বাগচী, রহমান মুফিজ, দিলরুবা সুলতানা, অপূর্ব গৌতম, সুভাষ চন্দ, জলিল আহমেদ, সাব্বির রেজা, কোরবান আলী মণ্ডল, মৃণাল কান্তি ঢালী, শাহ মো. জিয়াউদ্দিন, মোয়াজ্জেম হোসেন মানিক, মহিদুর রহমান, শ ম কামাল, বিমল কান্তি দাস, আনোয়ার কামাল, মীর মোশাররফ হোসেন।