“দুঃশাসন হটাতে হবে, সাথে সাথে ব্যবস্থা বদলাতে হবে, জনগণের আস্থার বিকল্প গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া জনগণের মুক্তি আসবে না।” কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলম। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির গাইবান্ধা সদর উপজেলা কমিটির ডাকে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, রেশনিং ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, উন্নয়ন বঞ্চিত গাইবান্ধায় মেডিকেল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, জেলা হাসপাতাল ও মাতৃসদনে অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ, সকল ট্রেনে গাইবান্ধার জন্য আসন বৃদ্ধি, গাইবান্ধা থেকে ঢাকা নতুন ট্রেন চালু, নদীভাঙ্গন রোধ ও যানজট নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সোমবার (২ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় গাইবান্ধা পৌর শহিদ মিনার চত্বরে কমিউনিস্ট পার্টি, গাইবান্ধা সদর উপজেলা কমিটির ডাকে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিপিবি, গাইবান্ধা সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি ছাদেকুল ইসলাম মাস্টারের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মুরাদ জামান রব্বানীর সঞ্চালনায় জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারি সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ, জেলা সিপিবি’র সভাপতি এ্যাড. শাহাদত হোসেন লাকু, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, দারিয়াপুর অঞ্চল সিপিবি’র সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মাস্টার, দারিয়াপুর অঞ্চল কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন, সদর উপজেলা কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর মন্ডল প্রমুখ। এছাড়াও জেলা কমিটির সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন উপজেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম আরও বলেন, বর্তমানে আওয়ামীলীগ সরকারের অধীনে যে সরকার পরিচালিত হচ্ছে তা একটি অগণতান্ত্রিক এবং বিনা ভোটের সরকার। এই সরকার ক্ষমতায় এসে উন্নয়ন এর নামে জনগণের পকেট কেটে জনগণকে সর্বশান্ত করেছে। তারা আবারও ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। সংবিধান সংশোধনের বিধিমালা থাকলেও সরকার সেটা আমলে নিচ্ছে না। অপরদিকে বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য এবং এই লুটপাটের ভাগ তাদের ঘরে তোলার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই এই দ্বিদলীয় রাজনৈতিক দলের বাহিরে বাম গণতান্ত্রিক শক্তির সরকার ব্যবস্থাই হলো একমাত্র মুক্তির পথ।
কমরেড মিহির ঘোষ বলেন, দেশে এক দুঃশাসন চলছে। অসৎ ব্যবসায়ী, অসৎ আমলা, অসৎ রাজনীতিবিদরাই দেশ চালাচ্ছে। দেশে গণতন্ত্র নাই, ভোটাধিকার নাই, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। সেই সাথে রাজনীতিতে বিদেশীদের নগ্ন হস্তক্ষেপ জাতি হিসেবে আমাদেরকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে গাইবান্ধা জেলা উন্নয়নের দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে। এরজন্য দায়ি গাইবান্ধার নেতৃত্ব। এদের হাত থেকে গাইবান্ধাকে বাঁচাতে হবে।
জনসভায় অন্যান্য বক্তাগণ, গাইবান্ধায় মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, জেলা হাসপাতাল ও মাতৃসদনে অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করে সকলের জন্য আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা, গিদারী, কামারজানীর নদীভাঙ্গনরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ, সকল আন্ত:নগর ট্রেনে গাইবান্ধার আসন বরাদ্দ বৃদ্ধি, গাইবান্ধা থেকে ঢাকাগামী নতুন ট্রেন চালু, শহরের রেলগেইট, ব্রীজ রোড, দারিয়াপুর, তুলশীঘাট এলাকায় যানজট নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এবং এসব দাবিতে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে গাইবান্ধাবাসীর প্রতি আহবান জানান।
জনসভা শুরুর আগে একটি বিশাল মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জনসভাস্থলে এসে শেষ হয়।