সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষমতার দম্ভ এবং চলমান দুঃশাসন রুখে দাঁড়াতে জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
সিপিবি’র সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'ঈদে ঘরমুখো মানুষের ট্রেনের টিকেট পেতে সীমাহীন ভোগান্তির কথা আমরা জানি। এই ভোগান্তির সাথে যারা জড়িত তাদের যেখানে শাস্তি হওয়া দরকার ছিল সেটা না করে রেলের আইন ভঙ্গকারী মন্ত্রীর আত্মীয়দের সম্মান রক্ষায় মন্ত্রীর স্ত্রী যা করেছেন তা নজিরবিহীন। আবার সেই অন্যায় কাজটি ধামাচাপা দিতে মন্ত্রী যে মিথ্যাচার করে ঘটনা অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তাতে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। এহেন কর্মকাণ্ডে প্রমাণিত হচ্ছে রাষ্ট্র ও সরকারের প্যারালাল সরকার দেশ চালাচ্ছে। এতদিন সরকার দলীয় নেতারা প্যারালাল সরকার চালাতেন এবার দেখা গেল তাদের স্ত্রী, পরিবার ও প্রশাসনের উপর খবরদারী করে বিকল্প শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।'
ঈদের ছুটিতে রেলের টিকেটের সংকট ছিল অথচ সেই ট্রেনে এসি কেবিন ফাঁকা থাকছে। সীমাহীন অব্যবস্থার ভেতরে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, একজন দন্ডিত সংসদ সদস্য বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে আবার যখন ইচ্ছে ফিরে আসছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উপরের চাপের ভয়ে কিছু বলতে পারছে না। অন্যদিকে একজন সাংসদ আইন অমান্য করে গণপিটুনির ঘটনা উস্কে দিচ্ছেন।দেশে নিকৃষ্ট শাসন চলছে যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে পেশিশক্তি-লুটেরাদের প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।
ঈদের আগে থেকে সরকারের প্রতিষ্ঠান ভোক্তা অধিকার বিভিন্ন দোকান-গোডাউনে অভিযান চালিয়ে দেখালো যে, কিছু ব্যবসায়ী ভোজ্যতেল আমদানিকারক কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে তেলের দাম বাড়াচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং সরকার তেলের দাম বাড়িয়ে এই মুনাফাখোরদের ফুলে ফেপে ওঠার সুযোগ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে তেলের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে একজন মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই’। আর প্রধানমন্ত্রী সোয়াবিন তেলের পরিবর্তে বাদাম তেল খাওয়ার পরামর্শ দিলেন। এসবের মধ্যে দিয়ে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের ‘দায় মুক্তি’ দেওয়া হলো।
একের পর এক এসব ঘটনা স্পষ্ট করে দিচ্ছে, দেশে লুটেরা গোষ্ঠীর সরকার কায়েম হয়েছে। তারা জগদ্দল পাথরের মতো জনগণের বুকে চেপে বসেছে। তারা আইন-আদালত নিজেদের রক্ষা করতে ব্যবহার করছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে, ক্ষমতার দম্ভ ও রাষ্ট্রের অনাচার রুঁখে দাড়িয়ে, দুঃশাসন হটানো, ব্যাবস্থা বদলানো ও বিকল্প গড়ার সংগ্রাম অগ্রসর করতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।