নির্দলীয় তদারকি সরকারের দাবিতে বাম জোটের অবস্থান সমাবেশ

নির্দলীয় তদারকি সরকারের দাবিতে বাম জোটের অবস্থান সমাবেশ

আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, দূর্নীতি-লুটপাট ও পাচারের টাকা উদ্ধার, সিন্ডিকেট ভাঙ্গা ও পাচারকারীদের বিচারের দাবীতে বাম গণতান্ত্রিক জোট আজ ৫ অক্টোবর ২০২৩ দেশব্যাপী অবস্থান সমাবেশ করেছেন।

ঢাকায় আজ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত অবস্থান সমাবেশ বেলা ২টা পর্যন্ত চলে। জোটের সমন্বয়ক বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের  সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অবস্থান সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদ) সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ। অবস্থানে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ডক্টরস ফর পিপলস নেতা ডা. হারুন অর রশীদ, ৩১ সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা রঘু অভিজিৎ রায়, পাটকল শ্রমিকনেতা মোঃ গোফরান, ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. আনোয়ার হোসেন রেজা, কৃষক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন খান, নারী নেত্রী সীমা দত্ত, রোখশানা আফরোজ আশা, বিপ্লবী যুব মৈত্রী সভাপতি সৈয়দ মাসুক শাহী, গার্মেন্টস টিইউসি সহ-সভাপতি জলি তালুকদার, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সুপ্তি রায় সুপ্তি, হকার নেতা সেকান্দার হায়াৎ খান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, সালমান সিদ্দিকী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান লিপন।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনে দেশবাসী অতিষ্ঠ। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আবারো একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে প্রহসন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের দায়িত্বহীন আচরণের কারণে আজ দেশী-বিদেশী নানা শক্তি অপতৎপরতা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। গণআন্দোলন ও গণসংগ্রাম ছাড়া ভোটাধিকার আদায় ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা যাবে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে জন জীবন বিপর্যস্ত--অথচ সরকার ব্যস্ত ক্ষমতা রক্ষা নিয়ে। অর্থনীতির অবস্থা নাজুক, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণহীন। অন্যদিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও বিদেশে টাকা পাচার থেমে নেই। এ অবস্থা থেকে দেশবাসীকে বাঁচাতে আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান ও ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম অগ্রসর করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা ফেল করে গেছে। ইলেকশন পরিবারতন্ত্র, জমিদারতন্ত্র ও দলীয়তন্ত্রের সিলেকশনে পরিণত হয়েছে। রাজনীতি চলে গেছে দূর্বৃত্তদের হাতে। গত ৫২ বছরে শাসকরা এ অবস্থা তৈরী করেছে। বর্তমান আওয়ামী সরকার এটাকে স্থায়ী করতে চাইছে। একমাত্র নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক শক্তির  উত্থান এ অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে।

নেতৃবৃন্দ সারা দেশে দমন-পীড়ন বন্ধ ও ভোটাধিকার, গণতন্ত্র রক্ষায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে রাজপথে সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ-বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন জেলায়ও এ সব দাবীতে অবস্থান সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।