ধলপুর পল্লী সিটির বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ধলপুর পল্লী সিটির বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

উচ্ছেদকৃত বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের দাবিতে ধলপুর সিটি পল্লী পুনর্বাসন ও সুরক্ষা কমিটির উদ্যোগে ১৯ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, সকাল ১১টায় রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা শ্রমিকনেতা সেকেন্দার হায়াৎ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন গত ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ধলপুর সিটি পল্লী থেকে বস্তিবাসীদের বিনা নোটিশে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি-ঘর, স্থাপনা ভেঙে বস্তির জায়গা দখল করে নেয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন তাদেরকে এই বলে আশ্বস্ত করে যে, আগামী ২ মাসের মধ্যে তাদেরকে পুনর্বাসন বা গৃহ প্রদান করবে। কিন্তু ৮ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও ধলপুর সিটি পল্লীর বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন বা গৃহ প্রদান করা হয়নি। এই অবস্থায় বস্তিবাসীদের জীবন ধারণের পথ অনিশ্চয়তার দিকে চলে যাচ্ছে। বস্তিবাসীরা বেকারে পরিণত হয়েছে। তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অর্ধহারে-অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ কেউ পেটের তাগিদে বিপথে চলে যেতে পারে। এতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটবে। একদিকে গৃহহীন-কর্মহীন এই মানুষগুলো পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি, বাড়িভাড়া বকেয়া পড়েছে। ফলে তাদের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে। এই দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষগুলো নিরুপায় হয়ে প্রতিরোধ সংগ্রামে নেমেছে। প্রতিদিন বিক্ষোভ-সমাবেশ, রাজনৈতিক বা স্থানীয় নেতাদের বাড়ি এবং অফিসের ধর্নাসহ নানা ধরনের কর্মকা- পরিচালনা করছে জীবনের তাগিদে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ১৯৯০ সালে রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ ৩টি রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে ধলপুর পল্লী সিটি বস্তিবাসীদের জন্য বরাদ্দ দেন। পরবর্তীতে ২৩০ পরিবারকে চুক্তির মাধ্যমে ধলপুর পল্লী সিটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। ৩৪ বছর ধরে এই পল্লী সিটিতে বস্তিবাসীরা তাদের সারা জীবনের অর্থ, শ্রম, মেধা বিনিয়োগ করেছে। দীর্ঘ সময় অতিক্রম হলেও বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন করা হয়নি। উপরন্তু একটি স্বার্থানেষি মহল তাদের ভয়ভীতি-হুমকি দিয়ে এলাকা থেকে চলে যেতে বাধ্য করছে। 

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ধলপুর পল্লী সিটির ২৩০ পরিবার এখানে অবস্থানকালে দাবি করে আসছিল তাদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা ও ন্যায্য মূল্যের দোকান চালু করতে হবে এবং করোনা ও ডেঙ্গু মহামারীর সময় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এ দাবিগুলো বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

ধলপুর পল্লী সিটির ২৩০ পরিবার যাতে দু মুঠো খেয়ে বাঁচতে পারে, মাথার উপরে ছাদ থাকে তার জন্য মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদেরকে পুনর্বাসন বা গৃহ বরাদ্দ দিতে হবে। উপরে উল্লেখিত প্রস্তাবনাসমূহ বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক ও সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের সভাপতি আলী হোসেন পলাশ, সাধারণ সম্পাদক রাসিদা বেগম, সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ খোকন, সুমি বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ বাবু, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ জাবেদ প্রমুখ।