গ্রামীণ বরাদ্দ লুটপাট বন্ধ, পল্লী রেশনিং চালু করা ও ষাটোর্ধ্ব মজুমদের বিনা সঞ্চয়ে মাসিক ১০ হাজার টাকা পেনশনের দাবিতে আজ বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির উদ্যোগে দেশব্যাাপী জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসব সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, গ্রামীণ ক্ষেতমজুরসহ গরিব মানুষের জন্য প্রতি বছর বাজেটে যা বরাদ্দ তার বেশিরভাগই কাগজে কলমে বণ্টন হয়। প্রকৃত গরিব মানুষ সেসব বরাদ্দ পায় না। দলীয়, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজন সেসব বরাদ্দ ভাটবাটোয়ারা করে নিয়ে নেয়। এসব বরাদ্দ লুটপাটের বিরুদ্ধে গ্রামেগঞ্জে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ এসব মানুষ খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। রেশনিং চালু করে ন্যূনতম দামে খাদ্যসামগ্রী গরিব মানুষের মধ্যে সরবরাহের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার পেনশনের জন্য আইন করেছে। সেখানে প্রতি মাসে কিস্তি আকারে ১০ বছর টাকা জমানোর পর বয়স ষাট হলে পেনশন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যারা দিন আনে দিন খায় সেসব খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে কিস্তির টাকা জমা দেওয়া সম্ভব নয়। বক্তারা বিনা সঞ্চয়ে ষাটোর্ধ্ব মজুরদের মাসিক ১০ হাজার টাকা পেনশন প্রদানের দাবি করেন। পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, যশোর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম দক্ষিণ সহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এসব কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন রেজা, কেন্দ্রীয় নেতা পরেশ কর, নলিনী কান্ত সরকার, আব্দুর রউফ, অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম অপু, দেলোয়ার হোসেন, সুব্রতা রায়, এখলাছুর রহমান চৌধুরী, হাফিজার রহমান, শ্রীদাম দাস, মোজাহারুল হক, কল্লোল বণিক, সাহা সন্তোষ, লিয়াকত আলী কাক্কু, শ্রীকান্ত মাহাতো, প্রদ্যুৎ ফৌজদার, অমৃত বড়ুয়া সহ জেলা-উপজেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও কর্মসূচির সাথে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার গরিব মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ১৫ বছর পার করে দিয়েছে। তাদের নানাভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্ঠি, প্রণোদনা, বরাদ্দ ঘরে পৌছে দেওয়া, বয়ষ্ক ভাতা বাড়ানো, পল্লী রেশন চালুর কথা থাকলেও তা সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারেননি। ঘরে ঘরে চাকুরির ওয়াদাও বাস্তবায়ন সরকার করতে পারেনি। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষকে দেখানোর জন্য ‘পেনশন কর্মসূচি’র আইন করলেও প্রকৃত অর্থে দিনমজুররা মাসে মাসে কিস্তি দিতে পারবে না। এসব গরিব মানুষের তালিকা করে সরকারের উদ্যোগে তাদের নামে কিস্তি জমা করার আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, তাদের বয়স ষাট হলেই মাসে ১০ হাজার টাকা পেনশন প্রদান করলে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। বৃদ্ধ বয়সে তারা খাবার, চিকিৎসা কিছুটা হলেও পাবে। নেতৃবৃন্দ আগামী দিনে গরিব মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম বেগবানের আরো কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান।