ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ

ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ

পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব যাদের উপর থাকবে, সেই ব্যক্তিদের নির্ধারণের কাজটি শুরু করতে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদ। নির্বাচনে নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের মতভেদ ইসি গঠন প্রক্রিয়ায় চলে আসার মধ্যে সোমবার বঙ্গভবনে এই সংলাপ শুরু হচ্ছে।

বিএনপি খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০১৬ সালে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিলেও এবার না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএনপির এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, “আমি দেখতে পাচ্ছি বিএনপির মধ্যে ‘না’রোগ দেখা দিয়েছে। সবকিছুতে তারা ‘না’ বলে। সংলাপে যাবে না, নির্বাচনে যাবে না এমনকি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও যাবে না। এখন না না বলতে বলতে আশঙ্কার মধ্যে আছি, কখন বিএনপিটাই নাই হয়ে যায়।”

সাংবিধানিক সংস্থা ইসির সদস্যদের নিয়োগে আইন স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও না হওয়ায় প্রতিবারই ইসি গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে মতভেদ তৈরি হয়। জটিলতা এড়াতে গত দুবার সার্চ কমিটির ব্যবস্থা হলেও বিতর্ক থামেনি।

মো. জিল্লুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে ইসি নিয়োগ দেওয়ার পর আবদুল হামিদও সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আসছেন।

গত ২৮ নভেম্বর সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, চলমান একাদশ জাতীয় সংসদের আগামী দুটি অধিবেশনের মধ্যে তিনি ইসি গঠন সংক্রান্ত আইন সংসদে তুলতে পারবেন। তবে আগের মতোই এবারের ইসিও সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমেই রাষ্ট্রপতি করবেন বলে জানান তিনি।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির এই আলোচনাকে ‘সংলাপ’ বলা হলেও বঙ্গভবনের ভাষা অনুযায়ী বলা হয়, ‘নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়’।

সংলাপের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠন করে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে সেই সংলাপ শুরু হয়েছিল। তা এক মাস ধরে ৩১টি দলের সঙ্গে চলে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল এখন তিন ডজনের বেশি।

সংলাপ শেষে সার্চ কমিটি গঠন করার পর সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই কমিটির কাজের সাচিবিক দায়িত্বও থাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের হাতে। সার্চ কমিটির সদস্যরা নতুন নির্বাচন কমিশনারদেনর নাম প্রস্তাব করেন। তাদের মধ্য থেকে বেছে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।

গত দুই কমিশনে পাঁচজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়া এই ব্যক্তিদের সবার ক্ষমতা সমান হলেও সমন্বয়ের জন্য একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই নতুন ইসি নিয়োগ দিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে।