বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেত্রকোণা জেলা কমিটি আয়োজিত গতকালের জনসভায় পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলায় সিপিবি কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, সদস্য ডা. দিবালোক সিংহ, জলি তালুকদার, জেলা সভাপতি নলিনী কান্ত সরকারসহ অসংখ্য নেতাকর্মী লাঞ্ছিত ও আহত করার প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে। তারা বিভিন্ন স্থানে বাম জোট ও শরিক দলগুলোর সভা-সমাবেশ, মিছিলে হামলা করছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের মানুষ আজ সরকারের অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে। একদিকে দ্রব্যমূল্যর উর্ধ্বগতি, সিন্ডিকেটে দৌরাত্ব সামাল দিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তেমনি আগামী নির্বাচন নিয়ে জনগণের যে দাবি ‘তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন’ তা আড়াল করতে সরকার তার পুলিশবাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে আজ নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। নেতৃবৃন্দ আওয়ামী জোট সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নেত্রকোণায় সিপিবি সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, ডা. দিবালোক সিংহসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারী পুলিশ এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, নেত্রকোণা পুলিশ প্রশাসন অনুমনির দোহাই দিয়ে মিছিল করতে বাধা দেয়। কিন্তু ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তান আমলে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিয্দ্ধু থেকে শুরু করে কোন আন্দোলনই অনুমতি নিয়ে হয় নাই। সরকারের সময় শেষ হয়ে এসেছে। হামলা-মামলা-বাধা প্রদান করে অতীতের অগণতান্ত্রিক-স্বৈরাচারী সরকারের মতো এ সরকারও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেনা। সংবিধান অনুযায়ী সংবিধান পরিবর্তন করে তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া সরকারের কোন বিকল্প পথ নেই। জনগণ এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হতে দেবে না।
বাম গণতান্ত্রিক জোট এর সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদ নেতা নিখিল দাস, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রকৌশলী নিমাই গাঙ্গুলী।
সমাবেশ থেকে আগামী ১৭ অক্টোবর সকাল ১১টায় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির প্রবর্তনসহ বাম জোটের দাবির সমর্থনে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।