ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাইসেন্স দিতে অনাগ্রহ সরকারের বৈষম্যের নীতির বহিঃপ্রকাশ

খুলনায় রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সমাবেশ ও গণমিছিল


ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাইসেন্স দিতে অনাগ্রহ সরকারের বৈষম্যের নীতির বহিঃপ্রকাশ

ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিকদের ওপর জুলুম-নির্যাতন বন্ধ, যানবাহন আটক বন্ধ করে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত নীতিমালা চূড়ান্ত করে বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদানের দাবিতে ২৭ মে ২০২২, শুক্রবার, বিকাল ৫টায় খুলনার পিকচার প্যালেস মোড়ে রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে শ্রমিকনেতা এস এম শাহাদাৎ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও খুলনা জেলা রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা মনোজ দাশ, এস এ রশিদ, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নাদিম, সিপিবি খুলনা জেলা কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল হান্নান, সিপিবি খুলনা মহানগর কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন খুলনা জেলা সংগঠক নিত্যানন্দ ঢালী, কিংসুক রায়, সহিদুর রহমান বাবু, আফজাল হোসেন রাজু, হুমায়ুন কবির, এস এম চন্দন, হরমুজ আলী, সোহেল মীর, মো.আক্তারুজ্জামান, তরুণ বিশ্বাস, মো.নাজমুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন খুলনা জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র সৌরভ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রযুক্তির এই অগ্রগতির সময়ে মানুষ দিয়ে মানুষ টানার পরিবহন একটি অমানবিক ব্যাবস্থা। এই অসহনীয় গরমে বড়লোকের জন্য এসি আর গরিব-মেহনতি মানুষকে প্যাডেল দিয়ে রিকশা চালানোয় বাধ্য করা, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাইসেন্স দিতে অনাগ্রহ সরকারের গরিব-মেহনতি মানুষের প্রতি বৈষম্য নীতির বহিঃপ্রকাশ। অথচ শহীদের রক্তে অর্জিত  বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সাম্য প্রতিষ্ঠা।

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে খুলনার প্রধান শ্রমিক অঞ্চলগুলোকে মৃত নগরীতে পরিণত করেছে। পাটকলের কাজ হারানো শ্রমিকদের একটি অংশ আজ নিজ উদ্যোগে ব্যাটারিচালিত যানবাহন শ্রমিক হিসেবে উপার্জনের চেষ্টা করছে। সরকার দেশের মানুষের কর্মসংস্থান করার উদ্যোগ না নিয়ে বারবার কর্মসংস্থান বন্ধের উদ্যোগ নেয়ার মধ্য দিয়ে তার গণবিরোধী চরিত্র উন্মোচন করেছে। প্রয়োজনে আজ শ্রমজীবী মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণবিরোধী সরকার পরিবর্তন করে জনতার রাজ প্রতিষ্ঠা করে রুটি-রুজি ও ভোটাধিকার রক্ষা করবে।

সমাবেশে বক্তারা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, আজকের এই সমাবেশ-মিছিল শ্রমজীবী মানুষের রুটি-রুজির জন্য। শান্তিপূর্ণ গরিব মানুষের এই সমাবেশ নস্যাৎ করতে সরকার ও সরকারি দলের লোকজন নানা ধরনের বাধা-ভয়ভীতি ও অপপ্রচার চালিয়েছে। এই সমাবেশ নস্যাতের জন্য ফ্যাসিস্ট সরকার ও সরকার দলের সকল চেষ্টা শ্রমিকরা রাজপথে এসে আজ যেমন ব্যর্থ করে দিয়েছে, তেমনিভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে রাজপথের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমরা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাইসেন্স আদায় করেই ছাড়ব।

সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক-ইজিবাইক শ্রমিকদের ওপর-নির্যাতন বন্ধ, যানবাহন আটক বন্ধ করে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত নীতিমালা চূড়ান্ত করে বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদানের দাবি জানান।

সমাবেশ শেষে শ্রমিকদের একটি গণমিছিল খুলনার পিকচার প্যালেস মোড় হতে ফেরিঘাট মোড়-খানজাহান আলী সড়ক-ফুল মার্কেট-সিমেট্রি রোড হয়ে ঐতিহাসিক শহীদ হাদিস পার্কে এসে সমাপ্ত হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি