১৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে টিইউসি ঢাকা মহানগর কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা কে এম মিন্টুসহ ছয় শ্রমিকনেতার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। টিইউসি মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি আকরাম হেসেনের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান নোবেল এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সাহিদা পারভীন শিখা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাদেকুর রহমান শামীম,মহানগর কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সেকান্দার হায়াৎসহ অনান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত টিইউসি মহানগর কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক এবং টিইউসি সাভার-আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি কে এম মিন্টু, আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, আশুলিয়া থানা রিকসা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল মজিদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন, সহসভাপতি আলম পারভেজ, মোহাম্মদ নান্নু মিয়ার মুক্তি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। উল্লেখ, গত ২৫ জুন আশুলিয়া থানা রিকসা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির প্রতিবাদ এবং রিকসা শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে পুলিশ হামলা চালায় এবং পরবর্তীতে নেতাদের নামে মামলা দায়ের করা হয়।
সমাবেশে শ্রমিকনেতা সাহিদা পারভীন শিখা বলেন " দেশের আপামর শ্রমজীবী মানুষ যখন দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে দিশেহারা তখন সরকার শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার উপর আঘাত করছে। শ্রমিকরা যখন ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছে তখন তাদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে শ্রমিকনেতাদের কারাগারে প্রেরণ করছে।"
সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিকনেতা আকরাম হোসেন বলেন " দেশে এখন আকাশচুম্বী বৈষম্য চলছে, ওয়াসার এমডি যেখানে ছয় লক্ষ টাকা বেতন পান তখন একজন চা-শ্রমিক মজুরি পান মাত্র ১২০ টাকা। অন্যদিকে সকল জিনিসের দাম আজ লাগামহীন। শ্রমিকরা একবেলা খেয়ে আরেক বেলা না খেয়ে জীবন ধারণ করছে৷ এই বিপর্যস্ত সময়েও সরকারী বাহিনীর মামলা-হামলা বন্ধ হচ্ছে না।"
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন "এদেশের প্রতিটি গনআন্দোলনে শ্রমিকরা তাদের জীবন দিয়ে আন্দোলনের সফলতা এনে দিয়েছে। শ্রমিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সফলতা পেতো না। প্রয়োজন হলে অধিকার আদায়ে শ্রমিকরা আরেকটি গণ-আন্দোলন গড়ে তুলে তাদের অধিকার আদায় করবে।"
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে ছয় শ্রমিকনেতার মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেয়া হয়।
সমাবেশ থেকে সারাদেশে ২৪১ টি চা বাগানের চা-শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করে অবিলম্বে ৩০০ টাকা মজুরীর দাবি মেনে নেয়ার আহবান জানানো হয়। সমাবেশের পূর্বে একটি লাল পতাকার বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরানা পল্টন মোড়ে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।