শিরোনাম
চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আগামীকাল শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দিলে দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকীতে পড়বে গ্রামীণ মজুরদের কাজ, ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা দিতে হবে মিরপুরে আগুনে পুড়িয়ে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে মশাল মিছিল জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করছেনা সিপিবিসহ চার বামদল জুলাই জাতীয় সনদের সর্বশেষ সংস্করণ সংশোধন না হলে স্বাক্ষর সম্ভব নয় আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার তদন্ত ও বিচার করতে হবে  মিরপুরের আনোয়ার ফ্যাশন ও কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের শোক ও সমবেদনা চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের লিজ দিতেই অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় বসেছে - সিপিবি এই সনদে সংবিধানের চার মূল নীতিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে

নির্যাতন বন্ধ ও লাইসেন্সের দাবিতে সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ

শ্রমজীবী মানুষের রুটি-রুজির অধিকার হরণ বন্ধ করার দাবি

শ্রমজীবী মানুষের রুটি-রুজির অধিকার হরণ বন্ধ করার দাবি

ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদানসহ ১০ দফা দাবিতে সমাবেশে জননেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, সরকার লুটপাটকারী সিন্ডিকেট ও মজুতদারদের স্বার্থে বাজার নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। যার প্রধান শিকার দেশের শ্রমজীবী মানুষ। একদিকে সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা, অন্যদিকে বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের মধ্য দিয়ে শ্রমজীবীদের রুটি-রুজির অবলম্বন সংকুচিত করা হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালকদের দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সহস্রাধিক শ্রমিকের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে ১০ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে মিছিলে নগরীর কদমফুল ফোঁয়ারার সামনে পুলিশ ব্যাপক বাধা প্রদান করে। এ সময় লোহার ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টারত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।

রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম মাইজভান্ডারির সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নাদিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন উপদেষ্টা প্রখ্যাত শ্রমিকনেতা মনজুরুল আহসান খান, উপদেষ্টা আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, রাগীব আহসান মুন্না, জলি তালুকদার, বস্তিবাসী ইউনিয়নের আহ্বায়ক মো. নুরুজ্জামান, রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক সুমন মৃধা, দপ্তর সম্পাদক অনিক রায়, ৫৫নং ওয়ার্ডের সভাপতি মুহিব মোল্লা, ৫৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদপুর থানা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম,  প্রমুখ।

সমাবেশে মনজুরুল আহসান খান বলেন, মন্ত্রী-এমপি-আমলাদের বেতন বৃদ্ধি হলে তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেটা বাস্তবায়নই করেন। সম্ভব হলে পূর্বের সময় থেকেই বেতন ও সুবিধা বৃদ্ধি কার্যকর হয়। সরকার ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিন্তু তা কার্যকর হচ্ছে না। বরং পুলিশ ও সরকারদলীয় গু-াদের মাসোহারা ঠিক রাখতে নীতিমালা প্রণয়ন ও লাইসেন্স প্রদান আটকে আছে। তিনি অবিলম্বে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন বলেন, ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান এই বাহন অর্থনীতিতে আরও ভূমিকা রাখতে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা সরকারকে রাজস্ব দিতে চায়। আমাদের দাবি একটি নীতিমালার মাধ্যমে লাইসেন্স প্রদান করা হোক। লাইসেন্স হওয়ার আগ পর্যন্ত রাস্তায় এবং নিচু এলাকায় আঞ্চলিকভাবে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন করতে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-মিশুক-ইজিবাইক আটক বন্ধ রাখা হোক।

সমাবেশে রাগীব আহসান মুন্না বলেন, সরকার আমাদের লাইসেন্সের দাবি কর্ণপাত করছে না। এর ফলে ব্যাটারিচালিত যানবাহন নিয়ে চলছে প্রচুর লুটপাট ও অরাজকতা। কার্ড ব্যবসার নামে হাজার হাজার কোটির টাকার দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে। চাঁদাবাজদরে সাথে এ খাতে অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও জড়িত। লুটপাটকারী ও চাঁদাবাজদের রুখে দিতে শ্রমিকের গণআন্দোলন এখন সময়ের দাবি।

স্মারকলিপিতে উল্লেখিত ১০ দফা দাবিসমূহ:

১. আধুনিকায়নের জন্য পর্যাপ্ত সময় বরাদ্দ করে বুয়েট প্রস্তাবিত মডেলে আধুনিকায়নসহ বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদান কর। আধুনিকায়নের জন্য আর্থিক প্রণোদনা দাও।

২. বিআরটিএ কর্তৃক ব্যাটারিচালিত যানবাহন চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান কর ও লাইসেন্স প্রদান সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত যানবাহন আটক বন্ধে নির্বাহী আদেশ জারি কর।

৩. ব্যাটারিচালিত যানবাহন শ্রমিকদের ওপর জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি বন্ধ কর। কার্ড- টোকেনের নামে চলমান অবৈধ চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত ব্যক্তি ও পুলিশ-ট্রাফিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ কর।

৪. ব্যাটারিচালিত যানবাহন গ্যারেজের ট্রেড লাইসেন্স প্রদান কর।

৫. বিভিন্ন রাস্তায় রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার কর। রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক ও সাইকেলের জন্য সকল সড়কে সার্ভিস লেন নির্মাণ কর। বাস্তবসম্মত পরিকল্পনার ভিত্তিতে রাস্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও ব্যাটারিচালিত যানের জন্য র‌্যাকার বিল কমিয়ে যৌক্তিক কর।

৬. শ্রমিকদের জন্য রেশন চালু ও বাসস্থানের ব্যবস্থা  কর।

৭. বিনামূল্যে চিকিৎসা ও শিক্ষা নিশ্চিত কর।

৮. ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে গণপরিবহন হিসেবে শিল্পের স্বীকৃতি দাও। শিল্পের বিকাশে সহায়তার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনার এক অংকের সুদে জামানতবিহীন ঋণ দাও।

৯. “জীবিকা সুরক্ষা আইন” প্রণয়ন কর।

১০. রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিকদের মানুষ হিসেবে নাগরিক অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত কর।