শিরোনাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলন নিত্যপণ্যের দাম কমানো, রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবিতে গাইবান্ধায় বাম জোটের বিক্ষোভ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জরুরী পদক্ষেপের দাবি বাম জোটের জ্বালানি খাতে এখনই ৪০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব খাওয়ার স্যালাইনের সহ-উদ্ভাবক বাংলাদেশের বন্ধু রিচার্ড ক্যাশ মৃত্যু বরণ করেছেন বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া যাবে তিনবার  কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে পদত্যাগের আলটিমেটাম  বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা ফেরাতে  আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক সহযোগিতায় রাজি শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক জাগরণ যাত্রার ডাক সিপিবি’র ৪ঠা নভেম্বর সংবিধান দিবস এবং ঐতিহাসিক ৭ই মার্চকে অস্বীকার করা, মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস পরিপন্থী : সিপিবি

ট্রাকে মিলবে না টিসিবির পণ্য

ট্রাকে মিলবে না টিসিবির পণ্য

শহরের রাস্তার ধারে টিসিবির পণ্য নিয়ে ট্রাকের দেখা আর না মেলার ইঙ্গিত দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

টিসিবির এই ট্রাকসেলে এতদিন যে কেউ সরকারের ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপণ্য কিনতে পারত। এখন শুধু দারিদ্র্যসীমার নিচে যারা, শুধু তাদের জন্যই টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে চায় সরকার।

বুধবার সচিবালয়ে নিত্যপণ্য নিয়ে এক সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, টিসিবির পণ্য আর সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে না। এখন থেকে কেবল দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থানকারী কার্ডধারী ব্যক্তিরাই টিসিবির পণ্য পাবে।

নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে বাজার সহনীয় করার সরকারি কৌশল হিসেবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে অতি জরুরি পণ্য বিক্রির চল অনেক দিনের। ডিলারদের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে এই পণ্য সবার কাছেই বিক্রি করত টিসিবি।

সম্প্রতি সয়াবিন তেল, পেঁয়াজসহ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার পর কম দামে পণ্য কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে শহুরে মানুষদের দাঁড়াতে দেখা গেছে লাইনে। মহামারী ও ইউক্রেইন যুদ্ধের মধ্যে সঙ্কটকালে মধ্যবিত্তকেও দেখা গেছে ট্রাকের পেছনের লাইন দীর্ঘ করতে।

 

গত এপ্রিলে রোজার মধ্যেও ঢাকায় ১০০ থেকে ১৫০টিসহ সারাদেশে ৫০০টি পর্যন্ত ট্রাক নামিয়ে সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, চিনি ও ডাল বিক্রি করেছিল টিসিবি। একজন ক্রেতা সেখানে পূর্ণ প্যাকেজ কিনতে পারলে বাজার দর বিবেচনায় ৪০০ টাকা সাশ্রয়ী হচ্ছিল।

প্রতি লিটার সয়াবিন যখন বাজারে ১৬০ টাকা ছিল, তখন টিসিবির ট্রাক থেকে কেনা যাচ্ছিল ১১০ টাকায়।

ঈদের আগে ট্রাকসেল বন্ধ হলেও ঈদের পর তা আবার শুরুর ঘোষণা ছিল টিসিবির। তত দিনে সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে প্রায় ২০০ টাকা ছুঁইছুঁই হওয়ায় অনেকে অপেক্ষায় ছিল ট্রাকসেলের জন্য।

কিন্তু ১৫ মে ট্রাকসেলে বিক্রি আপাতত শুরু না করার সিদ্ধান্ত জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা টিসিবি। তখন বলা হয়েছিল, জুন থেকে ফ্যামিলি কার্ডধারী ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণের প্রস্তুতির জন্য ট্রাকসেল এখন শুরু হচ্ছে না।

 

বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী ট্রাকসেল পুরোপুরি বন্ধের ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ভর্তুকির পণ্য সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিৎ না।

তিনি বলেন, “সরকারেরও কিন্তু বহন করার একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আমি বাণিজ্যমন্ত্রী, আমার কামাই ভালো, ব্যবসা বাণিজ্য করি। এখন আমাকেও যদি সুলভ মূল্যের পণ্য দিতে হয়, তাহলে তো সমস্যা।

 

 

“ট্রাক সেল আর চলবে না। হয়ত কিছুদিন ট্রাক থেকেও কার্ডধারীদের পণ্য দেওয়া হতে পারে। অথবা স্থায়ী দোকানে কার্ডের মাধ্যমে পণ্য দেওয়া হবে।”

 

সরকারি সংস্থা টিসিবি শুধু শহরেই ডিলারদের মাধ্যমে ট্রাকে নিত্যপণ্য বিক্রি করত। উপজেলা সদর পর্যন্ত পৌঁছলেও গ্রাম পর্যায়ে কখনও যায়নি টিসিবির পণ্য।

জুন থেকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সারাদেশের এক কোটি পরিবারকে টিসিবির পণ্য দেওয়ার পরিকল্পনা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “জুন থেকে এক কোটি পরিবারকে সুলভ মূল্যে পণ্য দেব। আমাদের হিসাব হচ্ছে তিন কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। প্রতি পরিবারে পাঁচজন মানুষ হিসাব করলে পাঁচ কোটি মানুষ এই সুবিধা পাবে।

“আমার হিসাবটা ছিল ৫০ লাখ মানুষকে দেওয়া। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কষ্ট হলেও এক কোটি মানুষকে এর আওতায় নিয়ে আস। টিসিবির পণ্য নিয়ে গ্রামে গঞ্জে পৌঁছাতে হবে। দারিদ্র্যসীমার উপরেও একটা শ্রেণির মানুষ এই সুবিধা পাবে।”

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বুধবার দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের সভায় মন্ত্রী টিপু মুনশি।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বুধবার দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের সভায় মন্ত্রী টিপু মুনশি।

টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান বলেন, “প্রাথমিক অবস্থায় ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে পণ্য দেওয়া হলেও পরে সেটা অ্যাপসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আমরা বিভিন্ন অ্যাপের বিষয় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করছি। একজন তালিকাভুক্ত ভোক্তা কেবল স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে পণ্য নিতে পারবেন, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

কোভিড মহামারী শুরুর পর নগদ সহায়তা পাওয়া ৩০ লাখ পরিবারের সঙ্গে পরিসংখ্যান ব্যুরোর দারিদ্র্যের সূচক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আরও তথ্য নিয়ে কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য পাওয়ার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় কার্ডধারীদের কাছেপণ্য পৌঁছাবে টিসিবি।