খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর ২০ বছরের কারাদণ্ড

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর ২০ বছরের কারাদণ্ড

বিস্ফোরক আইনে মামলায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান ওই রায় ঘোষণা করেন।

 

দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন নূর মোহাম্মদ ওরফে অনিক ও মোজাহিদুল ইসলাম ওরফে রাফি। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নূর মোহাম্মদের বাড়ি মানিকগঞ্জে। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। মোজাহিদুল ইসলামও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি বগুড়ায়।

 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমদ বলেন, ওই দুজন নব্য জেএমবির আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। তাঁরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থাকার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে গল্লামারী এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। ওই ভাড়া বাসায় তাঁরা বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য মজুত করেন। ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি দিবাগত রাতে সেখান থেকে তাঁদের আটক করা হয় এবং ওই ভাড়া বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ২৫ জানুয়ারি সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন তৎকালীন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রহিত কুমার বিশ্বাস। ওই দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।

 

মামলাটি তদন্ত করেন খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কর্মকর্তা এনামুল হক। ওই বছরের ২২ আগস্ট দুই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত মামলার মোট ১৯ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য নিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন। মামলাটিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এম এম কবীর আশরাফুল আলম। রায়ের ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

 

২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি আসামি দুজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই প্রেস ব্রিফিংয়ে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির জানিয়েছিলেন, ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খানজাহান আলী থানা কৃষক লীগ কার্যালয় ও ৫ ডিসেম্বর আড়ংঘাটা থানার গাড়ি রাখার গ্যারেজে যে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন নূর মোহাম্মদ ও মোজাহিদুল। তাঁরা নব্য জেএমবির সদস্য।

 

ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়েছিল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁরা উগ্রবাদী মতাদর্শে আকৃষ্ট হন। পরে নব্য জেএমবির আদর্শে অনুপ্রাণিত ও প্রভাবিত হয়ে জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হন। একপর্যায়ে নিজেরাই নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ছক তৈরি করে ও দূরনিয়ন্ত্রিত বোমা তৈরির কারিগরি জ্ঞান অর্জন করেন। তাঁরা দূরনিয়ন্ত্রিত বোমা প্রস্তুত করে ওই দুই স্থানে বিস্ফোরণ ঘটান। বোমার সরঞ্জাম রাখার জন্য তাঁরা ভাড়া বাসা ব্যবহার করতেন।