ঢাকায় ক্ষেতমজুর সমিতির বিক্ষোভ

বাজেটে ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুরদের জন্য পর্যাপ্ত পৃথক বরাদ্দের দাবি


ঢাকায় ক্ষেতমজুর সমিতির বিক্ষোভ

বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ ২৪ মে বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, প্রতিবছর বাজেট আসে বাজেট যায়। বড়লোক আরো বড়লোক হয়, গরিব আরোও গরিব হয়। করোনাকালীন সময়ে সরকারের যখন গ্রামীণ মজুরসহ ‘দিন এনে দিন খাওয়া’ মানুষদের জন্য বেশী বরাদ্দ করে তাঁদের ঘরে খাবার, অসুস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা ছিল তখন দেখা গেছে সরকারের লোকজন এসব মানুষের জন্য সরকারি যৎসামান্য বরাদ্দ লুটেপুটে নিয়েছে। বাজেটে গরিব মানুষের জন্য রেশন, ‘১০০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি’ চালু ও ন্যায্য মজুরি, বয়ষ্কদের পেনশন, বিধবা-প্রতিবন্ধি-স্বামী নিগৃহীতাদের ভাতার পরিমান বৃদ্ধি, বিনামূল্যে চিকিৎসা, ক্ষেতমজুরদের সন্তানদের শিক্ষা ও কাজের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য পৃথক বরাদ্দ রাখার দাবি জানান।
ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ডা. ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীণ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি জননেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা, সহ সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার বাপ্পী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, সুখেন্দু সূত্রধর, টিইউসি নেতা মেহেদী হাসান নোবেল। সমাবেশ পরিচালনা করেন নির্বাহী কমিটির সদস্য মোতালেব হোসেন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারা বছর গ্রামে কাজ না থাকায় ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুররা কাজের আশায় বিভিন্ন প্রান্তে চলে যায়। সেখানে তারা মানবেতর জীবনযাপন করে। ফলে ধান কাটার মৌসুমেও অনেকে এলাকায় আসতে পারে না। মজুররা বেশি মজুরি নিচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কথা প্রসঙ্গে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একজন মানুষ রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ধান কেটে আবার তা কৃষকের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে দুদিনও সংসার চলে না। এসব মানুষ সকাল বেলায় কাজ পাবে কি-না সেই অনিশ্চয়তা নিয়ে রাতে ঘুমোতে যায়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের সিংহভাগ এই গ্রামীণ মজুরদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপ দিতে সরকারের উদ্যোগে বিশেষ প্রশিক্ষণের দাবি জানান।
বয়স্ক ভাতা-বিধবা ভাতার কার্ড, সরকারী ঘর বরাদ্দে নানান অভিযোগ তুলে ধরে নেতৃবৃন্দ বলেন, ঘুষ ছাড়া একজন ভিক্ষুকেরও ভাতার কার্ড হয় না। আবার যাদের প্রয়োজন নেই সেই সকল মানুষও ভাতার তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত করে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করছে।
সরকারকে হুশিয়ার করে দিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভোটারবিহীন রাতের নির্বাচনে বর্তমান সরকার নির্বাচিত হয়ে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা ভুলে গেছে। সুতরাং জনগণকেই তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে।
সভা থেকে একই দাবিতে আগামীকালের দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানানো হয়।