ইমরানের লংমার্চ ঠেকাতে ধরপাকড়

ইমরানের লংমার্চ ঠেকাতে ধরপাকড়

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের সিনেটর ইজাজ চৌধুরী, পাঞ্জাবের জ্যেষ্ঠ নেতা মিয়া মেহমুদ উর রশিদসহ আরও কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দলটির লংমার্চকে সামনে রেখে গতকাল মঙ্গলবার এ অভিযান চালানো হয়। খবর জিও নিউজের।

গত মাসে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান একসময়কার তারকা ক্রিকেটার ইমরান খান। ক্ষমতা হারানোর পর থেকে সারা দেশে গণসমাবেশ করে নতুন জোট সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন তিনি। এর অংশ হিসেবে আজ বুধবার রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ ঘোষণা করেন ইমরান। এ লংমার্চ রুখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দলের নেতা–কর্মীদের নিয়ে নতুন নির্বাচনের দাবিতে ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন ইমরান খান।

লংমার্চ ঠেকাতে গতকাল দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের ধরপাকড় শুরু করে দেশটির পুলিশ। পাঞ্জাবে সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী হাম্মাদ আজহার, উসমান দার ও বাবর আওয়ানের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। লাহোরে অভিযান চলার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন।

গতকাল গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে জ্যেষ্ঠ পিটিআই নেতা মিয়া মেহমুদ উর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জন আদেশ রক্ষণাবেক্ষণ আইন (এমপিও)–এর ১৬ ধারার আওতায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শাফকাত মেহমুদের বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে তিনি তখন বাড়িতে ছিলেন না।

পুলিশের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে পাঞ্জাবে পিটিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শাফকাত মেহমুদ এক টুইটার পোস্টে লিখেছেন, কোনো ধরনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে।
টুইটার পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমি সেখানে ছিলাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাঁরা কি সত্যিই মনে করে এসব কৌশল ব্যবহার করে আমাদের ভয় দেখানো যাবে?’

পরে পিটিআইয়ের মুখপাত্র দাবি করেছেন, সিনেটর ইজাজ চৌধুরীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত এলাকায় তাঁকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ইজাজ চৌধুরীর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে করা এক পোস্টে বলা হয়, ‘যে জায়গায় তিনি থাকতেন, সেখানে শতাধিক পুলিশ অভিযান চালিয়েছেন। বাড়ির ফটক ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেখানে অবস্থানকারী তাঁর পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করা হয়েছে। তাঁদের ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের স্পৃহাকে দমিয়ে রাখা যাবে না।’

ইতিমধ্যে সিন্ধু প্রদেশের পিটিআই নেতাদের বিরুদ্ধেও ধরপাকড় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। বেশ কয়েকজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলে ইসলামাবাদে ইমরান খানের আজাদি মার্চ রুখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএমএলএন সরকার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, ফিতনা-ফ্যাসাদের বিস্তার ঠেকাতে পিটিআইকে লংমার্চ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ।

পুলিশ করাচির শাহ রাসুল কলোনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ পিটিআই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে দলের স্থানীয় নেতা পারভেজ খানও আছেন।

করাচিতে পিটিআইয়ের জাতীয় পরিষদ সদস্য শাকুর শাদ ও আফতাব জাহাঙ্গীরের বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়েছে। তবে তাঁরা তখন বাড়িতে ছিলেন না। তবে পুলিশ আফতাব জাহাঙ্গীরের ভাতিজাকে গ্রেপ্তার করে অজ্ঞাত স্থানে স্থানান্তর করেছে।