নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে ইউক্রেইন থেকে খাদ্যশস্য বের করতে দেয়া হবে: রাশিয়া

নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে ইউক্রেইন থেকে খাদ্যশস্য বের করতে দেয়া হবে: রাশিয়া

‘আগে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিন, তারপর ইউক্রেইনে পড়ে থাকা খাদ্যশস্য বের করে নিতে পারবেন’, ইউক্রেইন থেকে খাদ্যশস্য বের করে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেয়া প্রস্তাবে এভাবেই সাড়া দিয়েছে রাশিয়া।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খাদ্যশস্য উৎপদন ও রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেইন।

গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করলে তার জেরে বিশ্বজুড়েই দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। খাদ্য ঘাটতির কারণে মূল্যস্ফ্রীতিও আকাশ ছুঁয়েছে।

যুদ্ধ শুরু পর ইউক্রেইনের রপ্তানি শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। অথচ দেশটি বিশ্বের বৃহৎ গম, ভুট্টা, বার্লি, সূর্যমুখী তেল এবং সরিষার তেলের রপ্তানিকারক দেশ।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এখনো ইউক্রেইনের গুদামে পড়ে আছে দুই কোটি টন গম। রাশিয়া সমুদ্র পথ আটকে দেওয়ায় সেগুলো রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় ইউক্রেইন থেকে ওই গম বের করে আনার পথ খুঁজে পেতে মস্কোকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

আগ্রাসন শুরুর পর রাশিয়া প্রথমেই কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেইনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলো অবরুদ্ধ করে ফেলে।

বিবিসি জানায়, ইউক্রেইনের বন্দর নগরী ওডেসায় যুদ্ধ শুরুর পর বাণিজ্যিক জাহাজের আনাগোনা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।

এক সপ্তাহ আগে ইউক্রেইনের সর্ববৃহৎ বন্দর নগরী মারিউপোলেরও পতন ঘটে। পুরো নগরীর নিয়ন্ত্রণ এখন রুশ বাহিনী এবং রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে।

জলপথে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিকল্প হিসেবে ইউক্রেইন স্থলপথে রপ্তানির চেষ্টা করতে পারে, এমন সম্ভাবনাও খুব কম বলে মনে করে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

ইউক্রেইন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পুরো বিশ্বের উপর পড়েছে। দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট, কয়েক গুণ বেড়ে গেছে সব নিত্যপণ্যের দাম।

ইউক্রেইনের গুদামগুলোতে পড়ে থাকা গম বের করে আনতে মঙ্গলবার মস্কোর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লাইন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ (বিষয়) হল কৃষ্ণ সাগর থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়া। রাশিয়ার প্রতি এটি আমাদের আহ্বান।”

জবাবে ক্রেমলিনের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই রুদেনকো বলেন, রাশিয়া একটি নিরাপদ মানবিক করিডর তৈরি করে দিতে প্রস্তুত আছে। যেটি দিয়ে পণ্যবোঝাই জাহাজ নিরাপদে ইউক্রেইন ছাড়তে পারবে। তবে সেজন্য আগে রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং কিইভকে কাছের জলসীমা মাইন মুক্ত করতে হবে।