সরকার উন্নয়ন বলতে অবকাঠামো উন্নয়ন আর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই বোঝে। জাতির মনোজগতের উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক উন্নয়নকে তারা হিসাবেই নিচ্ছে না। ফলে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী ধর্মীয় উগ্রতা, কূপমন্ডুকতা এবং চরম অসহিষ্ণুতায় নিমজ্জিত হচ্ছে। বিস্তৃতি ঘটছে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের। বিস্তৃতি ঘটছে ভোগবাদী চিন্তার। হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ঐতিহ্য বিস্মৃত হচ্ছে গোটা জাতি। দেশের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ঐক্য নস্যাৎ করে শোষণ ও লুণ্ঠনের পথই অবারিত করা হচ্ছে। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী কালেও সংস্কৃতি নিয়ে রাষ্ট্রের কোনো কর্মসূচি নেই। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার যে সাংস্কৃতিক জাগরণ এই দেশে সংঘটিত হওয়ার কথা ছিল তাও হয়নি। কারণ রাষ্ট্র বা সরকার সংস্কৃতি খাতকে গুরুত্বই দেয়নি কখনো। প্রতিবছর বাজেটে সংস্কৃতি খাতকে সীমাহীন উপেক্ষার মুখে পড়তে হয়। বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ না বাড়ালে এ রাষ্ট্র তার জন্মচেতনা ৭১ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে বাধ্য।
সংস্কৃতি খাতে জাতীয় বাজেটের ন্যুনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবিতে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত সংস্কৃতিকর্মী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা সংসদে উত্থাপিত বাজেট সংশোধন করে অবিলম্বে জাতীয় বাজেটের ১ শতাংশ সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ দানের দাবি জানান। অন্যথায় দেশব্যাপী বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেন তারা।
উদীচী সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শনিবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, উদীচীর সহ-সভাপতি প্রবীর সরদার, জামসেদ আনোয়ার তপন, ইকরামুল কবির খান, সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, ঢাকা মহানগরের সভাপতি নিবাস দে ও সহ-সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান। সমাবেশ পরিচালনা করেন সহ-সাধারণ সম্পাদক সংগীতা ইমাম।
সমাবেশে গণসগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সাজেদা বেগম সাজু ও মায়েশা সুলতানা ঊর্বি।