শিরোনাম
অনলাইনে কুতথ্য প্রতিরোধে সফল ভূমিকা রাখছে আইইডি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলন নিত্যপণ্যের দাম কমানো, রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবিতে গাইবান্ধায় বাম জোটের বিক্ষোভ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জরুরী পদক্ষেপের দাবি বাম জোটের জ্বালানি খাতে এখনই ৪০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব খাওয়ার স্যালাইনের সহ-উদ্ভাবক বাংলাদেশের বন্ধু রিচার্ড ক্যাশ মৃত্যু বরণ করেছেন বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া যাবে তিনবার  কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে পদত্যাগের আলটিমেটাম  বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা ফেরাতে  আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক সহযোগিতায় রাজি শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক জাগরণ যাত্রার ডাক সিপিবি’র

হালাল ব্যবসার নামে প্রতারণা করা এহসান গ্রুপের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

রাগীব আহসান ২০০৭ সালে ইমামতির পাশাপাশি ঢাকায় একটি এমএলএম কোম্পানিতে ৯০০ টাকা বেতনে চাকরি করেন। সেখান থেকে প্রতারণার আদ্যোপান্ত রপ্ত করে আত্মসাতের ব্যবসায় নামেন তিনি


হালাল ব্যবসার নামে প্রতারণা করা এহসান গ্রুপের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

শরিয়াহভিত্তিতে লাভের কথা বলে হালাল ব্যবসার নামে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এহসান গ্রুপের সব স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত।

 

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকার তদন্ত কর্মকর্তাদের তদন্ত ও রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৩ জুন) জেলা ও দায়রা জজ মো. মহিদুজ্জামান এই আদেশ দেন।

 

পিরোজপুর জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি খান মো. আলাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

আদেশে উল্লেখ করা হয়, তদন্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী এহসান গ্রুপের কর্ণধার মুফতি রাগীব আহসানসহ গ্রেপ্তার সাতজন ও তাদের নিকটাত্মীয়দের অপরাধলব্ধ স্থাবর সম্পত্তি ও তার ওপর নির্মিত স্থাপনা ক্রোক করা প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানটি দেশের ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে ১৪৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও প্রতিষ্ঠানের নামে বহু সম্পদের মালিক হয়েছে।

 

এই মামলায় এজাহার নামীয় আসামিদের ও তাদের সব নিকটাত্মীয়দের স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়ে আগত অর্থের উৎস গোপন করায় মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ১৪৩ ধারা অনুযায়ী রাগীব আহসান ও সহযোগীদের নামের অনুকূলে ৪০টি দলিল এবং রাগীব আহসান, তার ভাই আবুল বাশার, খাইরুল ইসলাম, শামীম হাসান, মাহমুদুল হাসান ও রাগীব আহসানের স্ত্রী সালমা আহসানের নামে মোট পাঁচটি বিক্রয়কৃত দলিলও ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

সিআইডি ঢাকার ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম (অর্গানাইজড ক্রাইম) বিভাগের তদন্ত কর্মকর্তাদের তদন্তে উঠে এসেছে, হালাল ব্যবসায় বিনিয়োগের নামে হাজার হাজার মানুষকে নিঃস্ব করে এহসান গ্রুপের এমডি রাগীব আহসানসহ মামলার আসামিরা। পরস্পর যোগসাজশে এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা নিয়ে তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৯টি প্রতিষ্ঠান, নূর-ই-মদিনা ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট একাডেমি, নুরজাহান মহিলা মাদ্রাসা, পিরোজপুর বস্ত্রালয়, আল্লাহর দান বস্ত্রালয়, মক্কা এন্টারপ্রাইজ, বিসমিল্লাহ ট্রেডার্স, সাহাবা হজ কাফেলা ও এহসান সাউন্ড সিস্টেম নামক প্রতিষ্ঠান খুলে বিনিয়োগ করেন। প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও মামলার আসামিরা নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়েছেন। তারা প্রতারণার মাধ্যমে ১৪৫ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন ও ভোগ বিলাসে ব্যয় করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ লঙ্ঘন করেছে।

 

জানা গেছে, এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৯টি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগ এহসান গ্রুপের এমডি ও তার স্ত্রী সালমা আহসানসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে।

 

রাগীব আহসান ২০০৭ সালে ইমামতির পাশাপাশি ঢাকায় একটি এমএলএম কোম্পানিতে ৯০০ টাকা বেতনে চাকরি করেন। সেখান থেকে প্রতারণার আদ্যোপান্ত রপ্ত করে আত্মসাতের ব্যবসায় নামেন তিনি। রাগীব আহসান মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে প্রতারণার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। “শরিয়ত সম্মত সুদবিহীন বিনিয়োগ”-এর প্রচারণা চালিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করেন। এ ছাড়া তিনি ওয়াজ মাহফিল আয়োজনের আড়ালে ব্যবসায়ীক প্রচারণা চালান। মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া কোটি কোটি টাকা নিজের এবং আত্মীয় স্বজনদের নামে করা প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেন। ৩০০ কর্মচারী খাটালেও তাদের বেতন দিতেন না। গ্রাহকের পাশাপাশি কর্মচারীরাও প্রতারণার শিকার হয়েছেন।