সিলেট-সুনামগঞ্জকে দূর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি বাম জোটের

সিলেট-সুনামগঞ্জকে দূর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি বাম জোটের

দেশের বন্যা পরিস্থিতি, বানভাসী মানুষের দূর্গতি ও সরকারের ভূমিকা বিষয়ে ২১ জুন সকাল ১১ টায় পুরানা পল্টনস্থ ২ মনিসিংহ সড়কের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে বাম জোটের এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার।

বাম জোট নেতারা অবিলম্বে সিলেট-সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা, পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ ও পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে বলেন, দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করলো মানুষকে রক্ষায় সরকার, প্রশাসন ও আবহাওয়া দপ্তরের আগাম সতর্কবার্তা প্রেরণ, নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া, দুর্গত মানুষের জন্য খাদ্য, শিশু খাদ্য, পশু খাদ্য, খাবার পানি ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে চরম উদাসীন ও ব্যর্থ। মাত্র ২ সপ্তাহ আগেই যেখানে সুনামগঞ্জ ও সিলেটে ১ম বার বন্যা হয়ে গেল তারপরও সরকার, প্রশাসন ও আবহাওয়া দপ্তরের এহেন দায়িত্বহীনতা ক্ষমার অযােগ্য বলে নেতৃবৃন্দ মনে করেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বন্যা কবলিত দুই জেলার ৩০ লাখ মানুষের জন্য ৬০ লাখ টাকা অর্থাৎ প্রতিজনে ২ টাকা। তাই এধরণের সরকারি বরাদ্দ বানভাসী মানুষের সাথে প্রহসন।

সিলেট, সুনামগঞ্জসহ সারা দেশের বন্যা পরিস্থিতি, বানভাসী মানুষের দুর্গতি ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন,প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করে রাষ্ট্র-সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়ন, বাঁধ-সড়ক নির্মাণ, পাহাড়-টিলা-বন ধ্বংস করা, নদী-খাল খনন না করা, জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়া এবং নদী-খাল-জলাশয় দখল ও দূষণের কারণেই অতিবৃষ্টি ও বন্যা মহাদুর্যোগ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। অন্যদিকে ভারত সরকার মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে কৃত্রিম বনায়ন এবং বাংলাদেশের উজানে অসংখ্য বাঁধ-ড্যাম নির্মাণ করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। ফলে বর্ষায় পানি ছেড়ে দিয়ে বন্যার কবলে ফেলা এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি আটকে রেখে মরুভূমি বানাচ্ছে যা আন্তর্জাতিক নিয়ম ও আইন বিরোধী।

সংবাদ সম্মেলন থেকে পদ্মা সেতুর আড়ম্বরপূর্ণ উদ্বোধন অনুষ্ঠান স্থগিত করে ওই টাকা বন্যার্তদের ত্রাণ-পুনর্বাসনে ব্যয় করাসহ ৯ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্স, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু। উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবদী)র সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, বাসদ (মার্কসবাদী) নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বাংলাদেশর সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল আলী।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অনিরুদ্ধ দাস অঞ্জন, ডা. সাজেদুল হক রুবেল, আনোয়ার হোসেন রেজা, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য শামীম ইমাম, নজরুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী)র বিধান দাস।