বাজেটে বেকারদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের দাবিতে মানববন্ধন

বাজেটে বেকারদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের দাবিতে মানববন্ধন

কর্মহীন যুব নারী/পুরুষের অনলাইন ভিত্তিক তালিকা করে স্থায়ী কর্মসংস্থান প্রদান অন্যথায় সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার আওতায় বেকার ভাতা চালুসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় প্রেসক্লাব সম্মুখে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ বেকারত্ব মুক্ত মঞ্চ।

এসময় বেকারত্ব মুক্ত মঞ্চের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা আল ইহযায বলেন, জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে প্রতি বছর ২০ লাখের অধিক যুব নারী— পুরুষ নতুন করে শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছে কিন্তু আমাদের দেশে সে অনুসারে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। যার ফলে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ নতুন বেকার সৃষ্টি হচ্ছে।  বর্তমান বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা মোট বাজেটের ১৬.৭৫ শতাংশ। এর মধ্যে কর্মসৃজন খাতে ১৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে উক্ত বরাদ্দকৃত অর্থ স্বল্প মেয়াদী প্রকল্পে খরচ না করে দীর্ঘ মেয়েদি বেকার যুবকদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের জন্য  ব্যয় করতে হবে। মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন বর্তমান বাজেটে কর্মসংস্থানের উপর জোর দিবেন কিন্তু তা কতটুকু বাস্তবায়িত হবে এখন তা দেখার বিষয়। বিগত ২০১৯/২০ অর্থ বছরে সামাজিক নিরাপত্তা (ব্যবস্থাপনা) আইন শীর্ষক নতুন একটি আইন প্রণয়ন করে বেকার ভাতা প্রদান করার চিন্তা ভাবনা করেছিলেন বাংলাদেশ সরকার কিন্তু তা এখনো দৃশ্যমান নয়। কোভিড মহামারির কারণে চলমান ৩ বছর নতুন করে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি বরং অনেক কর্মজীবী বেকার হয়ে পড়েছে, এমন পরিস্থিতিতে বেকারত্বের সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের মন্ত্রনালয়গুলোর সুনির্দিষ্ট কোনো উদ্যোগ লক্ষণীয় নয়। আমরা বেকারদের স্থায়ী কর্মসংস্থান প্রদানের জন্য অনতিবিলম্বে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন বাজেটে ৪০ হাজার কোটি টাকা ওয়াকিং ক্যাপিটাল ঋণ প্রদানের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে এবং কর্মসংস্থান খাতে ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে উক্ত অর্থ সম্পূর্ণ রূপে বেকার যুবকদের অনলাইন ভিত্তিক তালিকা করে মাথাপিছু ১০ লাখ টাকা হারে ঋণ প্রদানের দাবী জানাচ্ছি।

 

১) দেশে মোট বেকারত্বের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে অনলাইন ভিত্তিক তালিকা করতে হবে। রাষ্ট্রীয় তত্বাবধায়নে বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

২) রাষ্ট্র বেকারদের কর্মস্থান নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে, মাসিক ১০ হাজার টাকা হারে বেকার ভাতা প্রদান করতে হবে।

৩) বেকারত্ব নিরসনের লক্ষ্যে (বেকারত্ব নিরসন) নামে মন্ত্রণালয় অথবা অধিদপ্তর গঠন করতে হবে।

৪) শিক্ষিত/ প্রশিক্ষিত/বিদেশ ফেরত/ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিনা জামানতে সহজ কিস্তিতে বিনা সুদে সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা ঋন প্রদান করতে হবে।

৫) বিদেশে যেতে ইচ্ছুক যুবকদের সরকারি খরচে অথবা নামমাত্র মূল্যে (যা বিমান ভাড়া খরচ), সরকারি তত্বাবধায়নে বিদেশ পাঠাতে হবে।

৬) চাকরি করতে ইচ্ছুক বেকার যুবকদের সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে আবেদন ফি ছাড়া তড়িৎ নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭) চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করতে হবে এবং অভিজ্ঞতা ও শ্রেণিবিন্যাস করন নিষিদ্ধ করতে হবে।

৮) বেকারদের নিকট থেকে চাকরি প্রদানের নামে অর্থ আত্মসাৎ বা চাকরি প্রদানের নামে প্রতারণা কারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কে শাস্তি প্রদান ও নিষিদ্ধ করতে হবে।

৯) বাতিল হয়ে যাওয়া সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের বেকার কর্মীদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

১০) রাষ্ট্রের মোট বাজেটের এক দশমাংশ অর্থ বেকারদের কর্মসংস্থান প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বরাদ্দ করতে হবে।

১১) দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ বা কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করাতে হবে এবং প্রশিক্ষণের যোগ্যতা বিবেচনাপূর্বক কর্মসংস্থান প্রদান করতে হবে।

 

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ অধ্যাপক হুমায়ুন কবির হিরু, মোঃ বাহারানে সুলতান বাহার, সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সম্রাট, ইসমাঈল হোসেন, আছমা আক্তার শীলা, আনোয়ার সাকিন, মুর্শিদুল হক বিদ্যুৎ, সরোয়ার আলম, টুটুল মন্ডল, মোঃ সলিমুল্লাহ হিরা, তুষার রহমান প্রমুখ।