এভিডেন্স (এমেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট,২০২২ এর খসড়ায় আদালতের অনুমতি ছাড়াই ভুক্তভোগীদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার উপর বিধিনিষেধ অন্তর্ভুক্ত করে, চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আজ সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। মন্ত্রি পরিষদ সদস্যবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ সচিবালয়ে মন্ত্রি পরিষদের সভা কক্ষে এই বৈঠকে বসেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ডিজিটাল কোর্টের স্বীকৃতি পাওয়ায় খসড়া আইনে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, দপ্রতিপক্ষের ভুক্তভোগীদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার প্রবণতা রয়েছে। খসড়া আইনে এর ওপর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারও চরিত্র নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।’ প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, ডিজিটাল রেকর্ডকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তথ্যের পাশাপাশি ডেটাও ব্যবহার করা যাবে। আইনটি ১৮৭২ সালের অ্যাক্ট, আইনটি শিগগির বাংলা করতে বলা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এছাড়াও, মন্ত্রিসভা গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০২২-এর খসড়ায় ৩০ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির বিধান নির্ধারণ করার পাশাপাশি 'নাবালোক' (অপ্রাপ্তবয়স্ক) শব্দের পরিবর্তে 'শিশু' শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। খসড়া আইন অনুযায়ী, কোনো শিশুকে গ্রাম আদালতে হাজির করা যাবে না এবং শিশু আইন অনুযায়ী শিশুটিকে সংজ্ঞায়িত করা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, আদালত সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ ধার্য্য করতে পারে, যা শিশু আইন, ২০১৩ সালে ছিল ৭৫ হাজার টাকা।
মন্ত্রিসভা এদিন ‘সামুদ্রিক মৎস আহরণ নীতিমালা,২০২২ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে। সব নৌযান নিবন্ধন প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে সময় লাগবে বলে এ সময় মন্ত্রিসভা মৎস্য অধিদফতরকে চার মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট রঙ ও নম্বর দিয়ে চিহ্নিত করার নির্দেশ দেয়।
খন্দকার ইসলাম বলেন, সামুদ্রিক মাছ ধরার জাহাজের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি হতে পারে।
মেধাস্বত্ত্ব রক্ষার লক্ষ্য নিয়ে ‘বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২২’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। নৈতিকতা, জনশৃঙ্খলা এবং জনগণের কল্যাণের পরিপন্থী সম্পত্তি আইনের অধীনে সুরক্ষা পাবে না উল্লেখ করে খন্দকার ইসলাম বলেন, অনিবন্ধিত শিল্প বা নকশাও সুরক্ষা পাবে না।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও রুয়ান্ডার মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির খসড়া অনুমোদন করা হয়।
এ সময় মন্ত্রিসভা চুক্তি স্বাক্ষরের আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অর্থনৈতিক দিকগুলো আরও মূল্যায়ন করতে বলে।