শিরোনাম
চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আগামীকাল শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দিলে দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকীতে পড়বে গ্রামীণ মজুরদের কাজ, ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা দিতে হবে মিরপুরে আগুনে পুড়িয়ে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে মশাল মিছিল জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করছেনা সিপিবিসহ চার বামদল জুলাই জাতীয় সনদের সর্বশেষ সংস্করণ সংশোধন না হলে স্বাক্ষর সম্ভব নয় আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার তদন্ত ও বিচার করতে হবে  মিরপুরের আনোয়ার ফ্যাশন ও কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের শোক ও সমবেদনা চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের লিজ দিতেই অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় বসেছে - সিপিবি এই সনদে সংবিধানের চার মূল নীতিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে

বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে করারোপ কেন?

সৌমিত জয়দ্বীপ


বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে করারোপ কেন?

"চলতি অর্থবছর থেকে বেসরকারি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মচারী কল্যাণ তহবিল থেকে অর্জিত আয়ের ওপর কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। শুধু তাই নয়, এই আয়ের ওপর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।

২০২৩ সালের আইনে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর কর আরোপের এই বিধানটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বেসরকারি খাতের প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি তহবিল ও শ্রমিকদের লভ্যাংশের তহবিলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক এবং করছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে।

তবে, আয়কর আইনে সরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডগুলোকে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।" - ডেইলি স্টার

বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর ২৭.৫% কর এবং সরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে যার পরিমাণ ০%! এটা স্পষ্টতই বৈষম্য এবং গতর খেটে পাওয়া শেষ বয়সের এই সামাজিক সুরক্ষার ওপর কর আরোপ করার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

বেসরকারি চাকুরিজীবীদের জন্য চালু হওয়া 'সর্বজনীন পেনশন স্কিমে' নাম লেখানোর সাড়া কম বলেই জানা যাচ্ছে। প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর ২৭.৫% কর আরোপ সম্ভবত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জোর করে নাম লেখাতে বাধ্য করারই কূটকৌশল।

বাজারে নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্য, নিয়ন্ত্রণ নেই কোন কিছুতেই। আয়কর দিতে দিতে জেরবার অবস্থা, কিন্তু নাগরিক সুবিধা সেরকম নেই বললেই চলে। চলছে মানি লন্ডারিং, বিদেশে টাকা পাচার ও বাড়ি-গাড়ি বানানো। চলছে তুমুল বাজার সিন্ডিকেট৷ আর ব্যাংকের ঋণ নিয়ে টাকা লোপাটের ঘটনা তো অহরহই ঘটছে। কর ফাঁকিবাজদের ধরার নাম নেই। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অবাধে দেয়া হচ্ছে কিন্তু সাজা নেই কোনো। অথচ, সব সাজা ভোগ করতে হবে সাধারণ মানুষকে! তাই প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর চারভাগের একভাগেরও বেশি কর আরোপ!

রিজার্ভে তো নাকি অনেক টাকা। তো আইন করে সাধারণ চাকুরিজীবী মানুষের টাকা লোপাট করার জন্য উঠেপড়ে লাগতে হলো কেন? অর্থনীতিবিদরা নিশ্চয়ই বলবেন, একটা রাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে কতটা দুর্বল হয়ে গেছে অবাধ দুর্নীতির ফলে যে, নাগরিকদের কল্যাণের চিন্তা বাদ দিয়ে এখন উল্টো পকেট থেকে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্র ও সরকার।

বেসরকারি খাতের লক্ষ লক্ষ পেশাজীবির আজ মন খারাপের দিন ঠিকই, কিন্তু তীব্র প্রতিবাদেরও দিন। সমন্বিত প্রতিবাদ শুধু ফেসবুকে না, কাগজে-কলমে চালু হলে, রাষ্ট্র নতুন করে সংকটে পড়বে।

দেশজুড়ে যখন ধর্ম নিয়ে, তালেবান ও নারীদের নিয়ে চরম মাতম, পক্ষে-বিপক্ষে হট্টগোল, তখন এসব পকেট কাটার কাজ করে ফেলা হয় নির্বিঘ্নে। এসব ইস্যু যাবে-আসবে, কিন্তু স্থায়ী ক্ষত তৈরি করে যাবে অর্থনৈতিক বৈষম্য৷ পরিশ্রমের টাকা পকেটে না থাকলে ধর্ম দিয়ে শুধু উদ্ধার পাওয়ার হালাল উপায় ইহজগতে নাই।

আমরা এই ফ্র্যাংকাস্টাইন থেকে কবে মুক্তি পাব?

 

লেখক: সৌমিত জয়দ্বীপ

এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, স্কুল অফ জেনারেল এডুকেশন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি