বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ঢাকা মহানগর সংসদের চলচ্চিত্র ও চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে শুরু হয়েছে ভিন্নধর্মী মুক্ত আলোচনামূলক আয়োজন, তথা অভিজ্ঞ নির্মাতাদের সাথে নতুন নির্মাতাদের আড্ডার প্ল্যাটফর্ম “সিনে আলাপ”।
২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় উদীচী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে “সিনে আলাপ”-এর দ্বিতীয় পর্ব। এ পর্বে চলচ্চিত্র দর্শন বিষয়ে আলোচনা করেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নন্দিত চলচ্চিত্রকার গিয়াস উদ্দিন সেলিম। উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের চলচ্চিত্র ও চারুকলা বিষয়ক সম্পাদক আজমীর তারেক চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যজন ড. রতন সিদ্দিকী, উদীচী ঢাকা মহানগরের সহ সভাপতি রতন কুমার দাস, বিমল মজুমদার, ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আরিফ নূর। অনুষ্ঠানে নির্মাতা সেলিম চলচ্চিত্র দর্শনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং উপস্থিত নতুন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে গিয়াস উদ্দিন সেলিম মানেই ভিন্নধর্মী শৈল্পিক সৃজনশীলতার স্বাদ। তেভাগা আন্দোলনের পটভূমিকে কেন্দ্র করে নির্মিত “আধিয়ার” চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলেন সেলিম। যেখানে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন আধিয়ার তথা বর্গাচাষীদের জীবন সংগ্রাম এবং তাদের উপর স্থানীয় জোতদার ও জমিদারদের অন্যায় অত্যাচার, অবিচার ইত্যাদি। তেভাগা আন্দোলন, এর সূত্রপাত এবং এর পরিণতি নিয়েই আধিয়ার চলচ্চিত্রটি সাজানো হয়। গিয়াস উদ্দিন সেলিম-এর আরেকটি আলোচিত চলচ্চিত্র “স্বপ্নজাল” যেখানে তিনি দেখিয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের নির্মম চিত্র। একইসাথে ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মল প্রেমের আখ্যান। এছাড়া, “মনপুরা’ সিনেমাতেও গ্রামবাংলার পটভূমিতে পারিবারিক প্রেমের গল্পের আড়ালে অসামান্য দক্ষতায় তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন সমাজের নানা অসঙ্গতি। মনপুরার জন্য শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন তিনি। গিয়াস উদ্দিন সেলিম নিজের সৃজনশীলতাকে ব্যবহার করছেন সমাজের নানা অন্যায়-অবিচার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলার কাজে। তার এসব কর্মকান্ড উদীচী কর্মীদেরও প্রেরণা জোগায়। আর এজন্যই এই গুনী নির্মাতাকে নিয়ে উদীচী ঢাকা মহানগর চলচ্চিত্র ও চারুকলা বিভাগ আয়োজন করেছে অভিজ্ঞ নির্মাতাদের সাথে নতুন নির্মাতাদের আড্ডার প্ল্যাটফর্ম “সিনে আলাপ”-এর দ্বিতীয় পর্ব।