রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগমের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কবি নজরুল কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ এবং কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার ( ০৮ আগস্ট) বেলা এগারোটার সময় কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করেন এ দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে কবি নজরুল কলেজের চার জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন এবং অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। কলেজ অধ্যক্ষ কোন শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নেননি। এমনকি শিক্ষার্থীদের যে যৌক্তিক আন্দোলন সেটির প্রতিও তার অনেক বিদ্বেষ ছিল। তিনি সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যার কারণে শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে আহত নিহত কারোর খোঁজ নেননি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কবি নজরুল কলেজ ছাত্র শাখার সমন্বয়করা বলেন, একজন কলেজ অধ্যক্ষ কিভাবে কোন আইনে সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত থাকতে পারে তা বোধগম্য নয়। তিনি সরাসরি ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করতেন। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বা সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন ক্যাম্পাসে মার খেতো তখন অধ্যক্ষ চুপ করে থাকতো। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা দিতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কবি নজরুল কলেজের ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষক বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার কোন নিয়ম নেই। অথচ তিনি সরাসরি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সরকার দলীয় সবাইকে সুযোগ সুবিধা দিতেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার বা দাবি দাওয়া কখনো তোয়াক্কা করেনি। এমনকি সাংবাদিকদের সঙ্গেও সবসময় বাজে ব্যবহার করতেন। কারণ তার স্বামী বিচারপতি এবং তিনি আওয়ামী লীগের অনেক বড় নেতা ছিলেন।
জানা যায়, অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির (২০২২-২০২৫) সদস্য ছিলেন। যা নিয়ে সরাসরি ক্ষোভ জানান কলেজের একাধিক শিক্ষকবৃন্দ।
এর আগে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণায় কবি নজরুল কলেজে বিরোধীদলীয় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি ভাঙচুর করেন। পরেরদিন কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রদল, ছাত্র শিবির, ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তবে এসময় ছাত্রলীগের কাউকে দেখা যায়নি।