তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সৃষ্ট দাবানলে পুড়ছে পর্তুগালের বিভিন্ন এলাকা। ভূমধ্যসাগরীয় দেশ স্পেন ও ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও বেড়েছে দাবানলের তীব্রতা। এসব দেশে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের হাজারো কর্মী। মোতায়েন করা হয়েছে উড়োজাহাজ। খবর বিবিসির।
পর্তুগালের উত্তরাঞ্চলে দাবানল নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত থাকা একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে এর পাইলট নিহত হয়েছেন। স্পেনের সীমান্তবর্তী ফজ সোয়া এলাকায় এটি বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজটি থেকে দাবানলের এলাকায় পানি ফেলা হচ্ছিল।
ফ্রান্সের জিরোন্দ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। সেখান থেকে ১২ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলের মিজাস পাহাড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় প্রায় ২ হাজার ৩০০ মানুষ সেখান থেকে সরে গেছে।
টোরেমোলিনোস এলাকার সাগরতীরে অবকাশযাপনে যাওয়া লোকজন বলেছেন, তাঁরা পাহাড়ের ওপর ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখেছেন। সেখানে দাবানল নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলের মিজাস এলাকায় ব্রিটিশ নাগরিক অ্যাশলে বেকার বিবিসিকে বলেন, গত শুক্রবার দাবানলের তীব্রতা ভয়ংকর হয়ে উঠেছে।
বিমান থেকে দাবানলের এলাকায় অগ্নিনির্বাপক বস্তু ছিটানো হচ্ছে। হেলিকপ্টারগুলো সমুদ্র থেকে পানি সংগ্রহ করে দাবানলের এলাকায় ফেলছে।
বেকার বলেন, ‘আমাদের এলাকায় প্রায় ৪০টি বাড়ি আছে। সত্যিকার অর্থে প্রত্যেকে উদ্বেগ বোধ করছেন এবং বাইরে কিংবা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তা (দাবানল) দেখছে। এখনো পাহাড়ের ওপর আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এখান থেকে সরে এটি ওদিকে ছড়িয়েছে, আমি খুব স্বস্তি বোধ করছি। পাহাড়ে বসবাস করাটা খুব ভয়ের। সব কটি রোড সাইন প্রতিনিয়ত প্রচণ্ড দাবানলের ঝুঁকির ব্যাপারে আপনাকে তথ্য জানিয়ে যাবে।’
ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিম আটলান্টিক উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দা কারিন দাবানলের তীব্রতা সম্পর্কে এএফপিকে বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমি আগে কখনো দেখিনি।’
কারিন থাকেন তেস্তে দে বুচ এলাকায়। ওই এলাকায় এবং সেখান থেকে দক্ষিণের এলাকা বরদক্সে দাবানলের কারণে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর (২৫ হাজার একর) এলাকা আগুনে পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের প্রায় তিন হাজার কর্মী সেখানে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।
ক্যাজুক্স গ্রামের বাসিন্দা ক্রিস্তোফ নেদের ও তাঁর জামাতা তেস্তে দে বুচ এলাকার কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। দাবানলের কারণে নিজেদের ঘর ছেড়ে এক কাপড়ে বের হয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
ক্রিস্তোফ নেদের বিবিসিকে বলেন, তাঁদের পোষা বিড়ালটিকে উদ্ধারের জন্য আবারও বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। বিপজ্জনক ওই অঞ্চল থেকে আরও কয়েক শ মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরে গেছেন।
বিবিসির প্রতিনিধি জেসিকা পার্কার বলেন, ওই এলাকা থেকে জীব-জন্তু উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে। তবে এর গতি ধীর।