বায়োস্কোপে মুক্তি পেল ‘সাঁতাও’

বায়োস্কোপে মুক্তি পেল ‘সাঁতাও’

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বায়োস্কোপে মুক্তি পেয়েছে শরিফ উল আনোয়ার সজ্জন প্রযোজিত, খন্দকার সুমন পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’। ১৩ অক্টোবর ২০২৩ থেকে বায়োস্কোপে দেখা যাবে চলচ্চিত্রটি।

কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সার্বজনীন রূপ এবং সুরেলা জনগোষ্টির সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় আবর্তিত হয়েছে গণ-অর্থায়নে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’ এর কাহিনী।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন যাপনের চিত্রায়নের প্রয়াসেই নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’। চলচ্চিত্রটিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল, ফজলুল হক। চলতি বছর ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের হলে মুক্তি পায় ‘সাঁতাও’। চলচ্চিত্রটি দর্শক নন্দিত হলেও অপর্যাপ্ত হলের কারণে দেশের অনেক দর্শক দেখার সুযোগ পাননি। দেশের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন জায়গায় ‘সাঁতাও’ এর বিকল্প প্রদর্শনী হয়েছে।

গত বছরের নভেম্বরে ২৪ তারিখে ভারতের ‘৫৩তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়া’ চলচ্চিত্র উৎসবের গোয়া প্রদেশের পাঞ্জি শহরে ‘ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার’ এবং চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ২১তম ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এ উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়েছে চলচ্চিত্রটির।

একাধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও অংশ নিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে ‘সাঁতাও’। ২১তম ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এ বাংলাদেশ প্যানরমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র হিসাবে ‘ফ্রিপ্রেসি’ পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’-র আয়োজনে ‘তৃতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’-এ ‘সেরা প্রযোজনা পরিকল্পনা’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের 'আমার ভাষার চলচ্চিত্র' উৎসবে শ্রেষ্ঠ শব্দ শৈলী বিভাগে ‘হীরালাল সেন পদক', ৬ষ্ঠ নেপাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্যানরমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে ‘গৌতম বুদ্ধ অ্যাওয়ার্ড’, ২৪তম রেইনবো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে চলচ্চিত্রটি।

নদীর অববাহিকায় সুজলা, সুফলা, শস্য, শ্যামলা  গ্রাম। নানান প্রকল্পের নাম করে নদীর উপর একের পর এক বাঁধ নির্মিত হয়েছে। উজানে বাঁধের কারণে নদীর ভাটি অঞ্চল প্রায় মরু ভূমিতে পরিণত হচ্ছে। কৃত্রিম ভাবে সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে এখনও কৃষি কাজ চললেও গ্রামের সাধারণ কৃষকের জন্য এই পদ্ধতিতে চাষবাস ব্যয়বহুল। সেচ প্রকল্পের নিয়ন্ত্রক গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ। কৃষকের এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে রমরমা ব্যবসা করছে দাদন ব্যবসায়ী এবং ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থা গুলো। গ্রামে এক দিকে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির চাপ অন্য দিকে কৃষি কাজের বৈরি পরিবেশ, কৃষকেরা গ্রাম ছেড়ে শহরে যাচ্ছে, জীবনের মায়া না করে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে। নানান দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে ফিরছে গ্রামে। এমন সব চলমান ঘটনার বিপরীতে থাকা একজন সাধারণ কৃষক ফজলু। মাতা-পিতাহীন ফজলু বিয়ে করে উজানের  গ্রামের মেয়ে পতুলকে। ফজলু এবং পুতুল দম্পতির পরিবারে একটি গরু নতুন সদস্য হয়ে আসে। ফজলু, পুতুল এবং গরু নিয়ে এগুতে থাকে সাঁতাও চলচ্চিত্রের গল্প।

চলচ্চিত্রটির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোঃ সালাউদ্দিন, সাবেরা ইয়াসমিন, স্বাক্ষ্য শাহীদ, শ্রাবণী দাস রিমি, তাসমিতা শিমু, মিতু সরকার, ফারুক শিয়ার চিনু, আফ্রিনা বুলবুল, রুবল লোদী, কামরুজ্জামান রাব্বী, আব্দুল আজিজ মন্ডল, বিধান রায়, জুলফিকার চঞ্চল, বিনয় প্রসাদ গুপ্ত, সুপিন বর্মণ, রেফাত হাসান সৈকত, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু, আলমগীর কবীর বাদল, রবি দেওয়ান, দীনবন্ধু পাল, হামিদ সরকার, মোঃ হানিফ রানা, আকতার হোসেন, আজিজুল হাকিম শিউস, সাইফুল ইসলাম লিটন, রাসেল তোকদার, মজনু সরকার, আবু কালাম, সিদ্দীক আলী, সুজন মাহমুদ, তাহসিনা আকতার তন্বী, নিশাত তাহিয়াত মিমন এবং তিস্তাবাজার এলাকাবাসী।

আইডিয়া এক্সচেঞ্জ এর ব্যানারে চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছেন শরিফ উল আনোয়ার সজ্জন। পরিচালনা, কাহিনী, চিত্রনাট্য এবং সংলাপ লিখেছেন খন্দকার সুমন, সম্পাদনা, রং-বিন্যাস, এফেক্ট ও টাইটেল, সাউন্ড ডিজাইন ও সাউন্ড মিক্সিং করেছেন সুজন মাহমুদ, শব্দ গ্রহণে ছিলেন নাহিদ মাসুদ, চিত্রগ্রহণে ছিলেন সজল হোসেন, ইহতেশাম আহমদ টিংকু ও খন্দকার সুমন, আবহ সংহীত করেছেন মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ, গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কামরুজ্জামান রাব্বী, লায়লা তাজনূর সাউদী, লিমা হক, শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন রবি দেওয়ান, পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন আফ্রিনা বুলবুল, নৃত্য পরিচালনা করেছেন ফাহিম রায়হান, রূপসজ্জা করেছেন ফরহাদ রেজা মিলন, পোস্টার ডিজাইন করেছেন সাজ্জাদুল ইসলাম সায়েম।

 

বায়োস্কোপে ‘সাঁতাও’ এর লিংক: https://cutt.ly/DwmCTdSK