সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের সুষ্ঠু তদন্ত, দায়ীদের শাস্তি, সুচিকিৎসা ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা এবং আবারও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ৭ জুন ২০২২, মঙ্গলবার ঢাকার মোহাম্মদপুর টাউনহল মোড়ে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, মোহাম্মদপুর থানা কমিটি।
সিপিবি মোহাম্মদপুর থানার সদস্য ও পার্টির কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান কমরেড মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে এবং থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড আশিকুল ইসলাম জুয়েলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি কমরেড ডা. সাজেদুল হক রুবেল, কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য কমরেড আহসান হাবীব, কমরেড আসলাম খান, কমরেড রাগীব আহসান মুন্না ও কমরেড লাকী আক্তার। এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন কমরেড আহমেদ তালাত তাহজীব ও জাহিদুল ইসলাম সজীব। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির নেতা কমরেড মোসলেহ উদ্দীন ও কমরেড মোতালেব হোসেন ও শরিফ উল আনোয়ার সজ্জন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জ্বালানী খাতে লুটপাটের দায় সাধারণ মানুষের ওপরে চাপানো হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে তিন বছরের মাথায় গৃহস্থলি গ্যাসের দাম আবারও বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারা বলেন, গণবিরোধী সরকার আর লুটেরা সিন্ডিকেটের যোগসাজশে ভোক্তা ও জনগণের পকেট কাটার মহোৎসব চলছে। অত্যধিক সিস্টেম লস রোধ করা গেলে এবং দেশীয় গ্যাস ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হলে গ্যাসের দাম আরো কমানো সম্ভভ। তারা বলেন, ঢাকাসহ যেসব এলাকায় মিটার নেই সেখানে দুই চুলার গ্রাহক গড়ে ৫০০ টাকার গ্যাস পুড়ালেও ৯৭৫ টাকা বিল দিচ্ছে।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডেকেটের হাতে জিম্মি এই সরকার চাল, ডাল তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগত বাড়িয়েই চলেছে। ভোটবিহীন ও রাতের ভোটে নির্বাচিত এই সরকার সাধারণ মানুষের প্রতি সরকার কোনো দায়বদ্ধতা দেখাচ্ছে না। সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, শাসকদল মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে ‘কেউ খাবে, আর কেউ খাবে না’ নীতিতে দেশ চালাচ্ছে। বক্তারা গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবি জানান।
সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে বক্তারা বলেন, অবহেলা ও দুর্নীতির কারণে এই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বরাবরের মত এই ঘটনাতেও দোষী মালিকের পরিচয় তিনি ক্ষমতাসীন দলের নেতা। বক্তারা বলেন, এর আগে ঢাকার নিমতলির চুড়িহাট্টা, নারায়ণগঞ্জের সেজান জুস, আশুলিয়ার তাজরিনসহ বহু কারখানায় মুনাফার লোভের আগুনে পুড়ে মানুষ মরেছে কিন্তু তার কোনো বিচার হয়নি। বরং আমরা দেখি সম্প্রতি আওয়ামিলীগ তাজরিনের সেই খুনী মালিককে দলীয় পদে আসীন করেছে। বক্তারা সীতাকুণ্ড বিস্ফোরণকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে বলেন, এর দায় সরকারকে নিতে হবে। এবং ক্ষতিগ্রস্থদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরন ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ অগ্নিকাণ্ডে সাহসের সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের নিহত ৯ সদস্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদেরকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করার দাবি জানান বক্তারা।